close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

৫ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালো সরকার

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্তে একসঙ্গে পাঁচজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। জনস্বার্থের কথা উল্লেখ করে হঠাৎ এমন পদক্ষেপে প্রশাসনে সৃষ্টি হয়েছে আলোড়ন ও নানা গুঞ্জন। একযোগে এই অবসর দেওয়ার পেছন..

বাংলাদেশের জনপ্রশাসনে বড় ধরনের রদবদলের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একসঙ্গে পাঁচজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক পাঁচটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকেও একই ধরনের সিদ্ধান্তে অবসর দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ধারাটি অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে যাদের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাদের জনস্বার্থে সরকার অবসরে পাঠাতে পারে — যদিও এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো কারণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা নেই।

অবসরে পাঠানো পাঁচ সচিব হলেন:

  1. কাজী এনামুল হাসান — মহাপরিচালক (সচিব), বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড

  2. সুকেশ কুমার সরকার — মহাপরিচালক (সচিব), জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অ্যাকাডেমি

  3. মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন — বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সচিব), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

  4. মুহম্মদ ইব্রাহিম — চেয়ারম্যান (সচিব), ভূমি আপীল বোর্ড

  5. ড. মো. সহিদ উল্যাহ — রেক্টর (সচিব), জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন অ্যাকাডেমি

এছাড়াও, আলাদা এক প্রজ্ঞাপনে অবসরে পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড. লিপিকা ভদ্র-কে, যিনি গ্রেড-১ কর্মকর্তা ছিলেন।

যদিও প্রজ্ঞাপনগুলোতে "জনস্বার্থে" অবসরের কথা বলা হয়েছে, তবে একসঙ্গে এতজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার অবসর খুবই ব্যতিক্রমী ঘটনা। প্রশাসন সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করছেন, এটি হয়তো ভবিষ্যৎ প্রশাসনিক পুনর্গঠনের একটি অংশ। কেউ কেউ আবার বলছেন, সরকারের গোপন মূল্যায়নের ফলেই এই সিদ্ধান্ত।

সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো কর্মকর্তা ২৫ বছর বা ততোধিক সময় চাকরিতে থাকেন, তবে সরকার "জনস্বার্থে" যেকোনো সময় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে পারে। তবে এই ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কারণ উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা নেই। ফলে, এই ধরনের অবসর আদেশ প্রায়শই বিতর্কের জন্ম দেয়।

জনপ্রশাসনে এই সিদ্ধান্তে একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক কর্মকর্তা আশঙ্কা করছেন, অবসরের মাপকাঠি আরও কড়াকড়ি হতে পারে। আবার অনেকে বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও কর্মদক্ষতা বাড়বে।

অবসরে পাঠানো সচিবরা সরকারি বিধি অনুযায়ী সব ধরনের অবসর সুবিধা পাবেন বলে প্রজ্ঞাপনগুলোতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তারা কেউই এ বিষয়ে এখনো সরাসরি গণমাধ্যমে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।

একসঙ্গে এতজন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠানো বিরল ঘটনা। এই সিদ্ধান্ত সরকারে প্রশাসনিক রদবদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। তবে প্রশাসনিক মহলে এ নিয়ে আলোচনা, বিশ্লেষণ এবং গোপন উদ্বেগ—সবই এখন তুঙ্গে।

لم يتم العثور على تعليقات