ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে
পাঁচ মাস আগে ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় অবশেষে দায় স্বীকার করেছে ইসরাইল। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সাবেক রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া গত ৩১ জুলাই ইরানের রাজধানী তেহরানে নিহত হন। শুরু থেকেই ইরান ও হামাস এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করলেও এতদিন বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিল ইসরাইল।
বিস্ফোরণ কক্ষে মৃত্যু
ইরানের তেহরানের একটি রাষ্ট্রীয় অতিথিশালার কক্ষে অবস্থান করছিলেন ইসমাইল হানিয়া, যখন ওই কক্ষের আগে থেকে স্থাপন করা বোমা বিস্ফোরিত হয়। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগে ইসরাইলি কর্মকর্তারা এই বিস্ফোরক স্থাপন করেছিল। তার আগের দিন ইসমাইল হানিয়া ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেন, "হুথি সন্ত্রাসীরা আজ ইসরাইলকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। আমি তাদের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই: আমরা হামাসকে পরাজিত করেছি, হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করেছি, সিরিয়া ও ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় গুরুতর আঘাত করেছি। ইয়েমেনের হুথি নেতৃত্বও এ যাত্রায় রক্ষা পাবে না।"
কাটজ আরও জানান, ইসরাইলের এই মিশন গাজা, লেবানন ও ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তৃত। তেহরানে ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ড ছাড়াও তারা গাজা উপত্যকায় হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং লেবাননে হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করেছে।
ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান অভিযান
গত ১৫ মাস ধরে ইসরাইলের গুপ্ত অভিযান ও বোমা হামলার তালিকায় রয়েছেন ইরান সমর্থিত সংগঠনগুলোর নেতারা। সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে বৈরুতে হত্যা করা হয় ২৭ সেপ্টেম্বর। এরপর ১৬ অক্টোবর গাজায় ইসমাইল হানিয়ার উত্তরসূরি ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করে ইসরাইল।
এই ধারাবাহিক অপারেশন ইসরাইলের যুদ্ধনীতির আরেকটি দিক প্রকাশ করেছে। প্রতিপক্ষের শীর্ষ নেতাদের সরাসরি টার্গেট করে তারা মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান আরো শক্তিশালী করছে।
বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া
ইসরাইলের এই স্বীকারোক্তি বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরাইলের এই কৌশলের নিন্দা জানালেও তারা প্রতিপক্ষের ক্রমাগত আক্রমণের জন্য নিজেদের অবস্থানকে যৌক্তিক বলে দাবি করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের এই নতুন মোড় আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
Tidak ada komentar yang ditemukan