close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের জাতহলিদা গ্রামের সুখদহ নদীর ওপর নির্মিত একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ চলাচল করছেন। গত ২০ বছর ধরে নিজেদের উদ্যোগে তৈরি এই সাঁকোটি এলাকাবাসীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলেও, বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে এটি ব্যবহার করছেন।
কৃষি জমি ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ
নদীর পূর্ব প্রান্তে রয়েছে গ্রামের বেশিরভাগ কৃষি জমি। কৃষকরা তাদের ফসল আনা-নেয়া এবং চাষাবাদের জন্য প্রতিদিন এই সাঁকো পারাপার করেন। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী কয়েকশ শিক্ষার্থীও ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হতে বাধ্য হন।
সাঁকোর ইতিহাস
এলাকাবাসী জানায়, সুখদহ নদীর ওপর প্রায় ২০ বছর আগে তারা নিজেরাই বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। সেই থেকে জাতহলিদা ও পুঠিয়ার ঘোন গ্রামের মানুষ সাঁকোটি ব্যবহার করে আসছেন। যদিও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে, তবুও সরকারি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বর্ষার সময় দুর্ভোগ চরমে
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। কাদামাটি আর নদীর পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কায় সাঁকোটি আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। তখন চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এলাকাবাসীর হতাশা
এলাকার কৃষক আব্দুল মালেক জানান, “বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ব্রিজ নির্মিত হলে আমরা যেমন সুবিধা পাব, তেমনি কৃষি পণ্য সঠিক মূল্যে বিক্রি করে স্বাবলম্বী হতে পারব।”
জাতহলিদা গ্রামের আতাউর রহমান খান বলেন, “নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মিত হলে দুই পাড়ের মানুষের জীবনযাত্রায় বড় পরিবর্তন আসবে। নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, নির্বাচনের পর তা আর কেউ বাস্তবায়ন করেন না।”
রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া
নেপালতলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুজন জানান, “এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি একটি সরকারিভাবে ব্রিজ নির্মাণ। এখানকার বেশিরভাগ কৃষি জমি নদীর পূর্ব পাড়ে। চাষাবাদ এবং ফসল উৎপাদনে প্রতিদিনই নদী পার হতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকোতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।”
সেতুর দাবি নিয়ে এলাকাবাসীর প্রত্যাশা
সুখদহ নদীর ওপর একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। তারা মনে করেন, একটি ব্রিজ নির্মিত হলে তাদের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন আসবে। কৃষি অর্থনীতি যেমন গতিশীল হবে, তেমনি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণেও থাকবে না কোনো বাধা।
তাই ২০ বছরের পুরনো এই বাঁশের সাঁকো থেকে মুক্তি পেতে এবং নিরাপদ চলাচলের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
No comments found