বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ক্ষণ, ১৯৭১ সালের বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ভারতের আসাম রাজ্যে এক মনোজ্ঞ 'এয়ার শো'-এর আয়োজন করেছে ভারতীয় বিমানবাহিনী (আইএএফ)। আসামের ডিব্রুগড় জেলার মোহনবাড়িতে পূর্বাঞ্চলীয় বিমান কমান্ডের তত্ত্বাবধানে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর যুদ্ধকালীন দক্ষতা, নির্ভুলতা এবং সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব জনগণের সামনে তুলে ধরাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। খবর অনুযায়ী, এই জমকালো প্রদর্শনীতে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে একটি ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রদর্শনীতে আইএএফ-এর সবচেয়ে শক্তিশালী এবং অত্যাধুনিক বিমান বহর অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুরন্ত গতির সুখোই এসইউ-৩০ যুদ্ধবিমান, নজরদারি কাজে ব্যবহৃত ডর্নিয়ার ডো-২২৮ বিমান, আন্তোনভ এএন-৩২ পরিবহন বিমান, ভারি-লিফট ক্ষমতাসম্পন্ন চিনুক হেলিকপ্টার এবং সুপরিচিত এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে যা দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। সামরিক ও বেসামরিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং বিমান বাহিনীর সাবেক সদস্যরা এই প্রদর্শনী উপভোগ করছেন।
এই 'এয়ার শো' শুধুমাত্র সামরিক শক্তির প্রদর্শনী নয়, এটি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট স্মরণ করিয়ে দেয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের স্মরণে এই অনুষ্ঠানে আলোচকচিত্র প্রদর্শনী এবং একটি বিশেষ চলচ্চিত্রও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে পূর্বাঞ্চলীয় বিমান কমান্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, যা ভারত-বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সামরিক বন্ধনের প্রতীক।
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জানা যায়, পাক হানাদার বাহিনী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে নির্মম সামরিক অভিযান শুরু করলে প্রায় এক কোটি মানুষ জীবন বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় নেন। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে গঠিত হয় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনী। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে এই যৌথ বাহিনী ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে অভিযান শুরু করে এবং ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত করে।



















