close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

১৯৪৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের দ্বারা যত কষ্ট পেয়েছেন, তার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাই ,জামায়াতের আমির..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
১৯৪৭ থেকে বর্তমান পর্যন্ত মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। এক টকশোতে জাতীয় দায় স্বীকার করে বললেন—ভুল ইতিহাসই ঠিক করে দেবে।..

৭৫ বছরের দায় স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করলেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত জামায়াত বা তার নেতাকর্মীদের দ্বারা কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, তার কাছে ক্ষমা চেয়ে জাতীয়ভাবে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি একটি টকশো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জামায়াত আমির এক বিস্ফোরক বক্তব্যে বলেন—শুধু একাত্তর নয়, ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমাদের দ্বারা যত মানুষ কষ্ট পেয়েছেন, কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন সেই সকল মানুষের কাছে আমি বিনা শর্তে ক্ষমা চেয়েছি।

অনুষ্ঠানে উপস্থাপক তাকে প্রশ্ন করেন: “যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম খালাস পাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে আপনি যেটি বলেছিলেন—সে ক্ষমা কি ১৯৭১ সালের জন্যও প্রযোজ্য?” প্রশ্নের জবাবে ডা. শফিকুর রহমান স্পষ্ট ভাষায় জানান, “হ্যাঁ, আমি শুধু একাত্তর নয়, ১৯৪৭ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মানুষের কষ্ট ও ক্ষতির জন্যই ক্ষমা চেয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আদর্শবাদী দল। কিন্তু মানুষ হিসেবে ভুল হতেই পারে। ব্যক্তি যেমন ভুল করে, তেমনি একটি রাজনৈতিক দলও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল করতে পারে। কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক সেটা নির্ধারণ করবে সময় এবং ইতিহাস। আজ যেটা ভুল মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতে হয়তো সেটিই সবচেয়ে বড় সত্য হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।”

ক্ষমা চাওয়াকে তিনি দুর্বলতা নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধের প্রকাশ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আমি কোনো লজ্জা বা সংকোচ ছাড়াই ক্ষমা চেয়েছি। এতে কোনো পরাজয়ের জায়গা নেই। বরং এটি একটি দায়িত্বশীল অবস্থান। আমি মনে করি, একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হচ্ছে নিজস্ব ভুলগুলোর দায় স্বীকার করা, এবং মানুষকে সেই ভুলের জন্য আশ্বস্ত করা যে ভবিষ্যতে তা পুনরাবৃত্তি হবে না।

ডা. শফিকুর রহমানের এই বক্তব্য দেশব্যাপী নানা প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই একে ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেও বিবেচনা করছেন। তবে নিঃসন্দেহে, বাংলাদেশে এ ধরনের দায়িত্বশীল রাজনৈতিক স্বীকারোক্তি খুবই বিরল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের এই অবস্থান পরিবর্তন যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। তবে ক্ষমা চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দলের অবস্থান, ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ নীতির বিষয়গুলোতেও পরিষ্কার অবস্থান জানানো জরুরি বলেও মত তাদের।

সামগ্রিকভাবে, জামায়াত আমিরের এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর বার্তা দিয়েছে—সময়ের সঙ্গে নিজেদের সংশোধন করতে প্রস্তুত যে কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য এটি হতে পারে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator