close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

১৩ বছর আগে বাতিল হওয়া দুর্নীতি মামলা ফের উত্থাপন: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের জোরালো আপিল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের মামলাটি হাইকোর্টে বাতিল হলেও তা ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে। এবার দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করেছে, শুনানি হবে ১৫ জুলাই।..

দুদকের জোরালো আপিল: বাতিল হওয়া দুর্নীতি মামলা ঘিরে শেখ হাসিনাকে ঘিরে নতুন উত্তেজনা

রাজনীতির প্রেক্ষাপটে একটি পুরাতন কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মামলা আবার সামনে চলে এসেছে। ২০০৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি দুর্নীতির মামলা বাতিলের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এবার আপিল বিভাগে আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলা ঘিরে আবারও তৈরি হয়েছে নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা।

মামলার পেছনের কাহিনী

১৯৯৬-১৯৯৭ অর্থবছরে দেশের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে শিকলবাহা, হরিপুর ও খুলনায় বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর, তৎকালীন দুদকের উপ-পরিচালক এম এম শাব্বির হাসান এই দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকার তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করেন। মামলার মূল অভিযোগ ছিল, প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় ঘটানো হয়েছে।

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়

মামলায় যেসব ব্যক্তির নাম আসে, তাদের মধ্যে রয়েছেন—

  • শেখ হাসিনা (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভাপতি)

  • তৌফিক ইলাহী চৌধুরী (সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব)

  • নুরুদ্দীন মাহমুদ কামাল (বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান)

  • মুহাম্মদ আজিজ খান ও মুহাম্মদ ফরিদ খান (সামিট গ্রুপ)

  • হাসান মাহমুদ রাজা ও আবুল কালাম আজাদ (ইউনাইটেড গ্রুপ)

বিচারিক পদক্ষেপ ও মামলার বাতিল

দীর্ঘ তদন্ত শেষে, ২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারি দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। পরে শেখ হাসিনা হাইকোর্টে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করলে, বিচারপতি শামসুল হুদা ও বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর বেঞ্চ ২০১০ সালের ১৩ এপ্রিল মামলাটি বাতিল করে দেন। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, মামলার আইনগত ভিত্তি ছিল না এবং অভিযোগগুলো যথাযথভাবে প্রমাণিত হয়নি।

দুদকের পুনরায় উদ্যোগ

দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর, চলতি বছরের ৫ মার্চ দুদক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। যদিও এই আবেদনে প্রায় ৫ হাজার ৪৫২ দিন দেরি হয়েছে, দুদক আদালতের কাছে দেরির কারণ ব্যাখ্যা করে মার্জনার আবেদন করেছে।

এই আবেদনের শুনানি প্রথমে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে ওঠে এবং ১৭ মার্চ তা পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়। রবিবার (১৮ মে) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে মামলাটি কার্যতালিকায় আসে।

পরবর্তী শুনানি

আদালত মামলাটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ১৫ জুলাই দিন ধার্য করেছেন। এদিন মামলার সকল পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন ও শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

এই মামলার পুনরুজ্জীবন রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে দেশের নির্বাচন, রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং নানা অভিযোগ-প্রতিআরোপের মধ্যে এটি একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

আলোচকরা বলছেন, এত বছর পর এই মামলার পুনরায় তোলার পেছনে কি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে, নাকি এটি শুধুই আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ—এটি আগামী দিনের শুনানিতেই পরিষ্কার হবে। তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি যদি বাস্তবায়ন করতে হয়, তাহলে এসব মামলার স্বচ্ছ বিচার ও প্রকৃত তথ্য সামনে আনাই হবে জাতির স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

 

  • বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ

  • ২০০৭ সালে মামলা, ২০১০ সালে হাইকোর্টে বাতিল

  • ২০২৫ সালে দুদকের পুনরায় আপিল

  • ৫ হাজার দিনের বিলম্বে শুনানির অনুমতি চাওয়া

  • পরবর্তী শুনানি: ১৫ জুলাই, আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator