close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

উচ্চকক্ষের নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হওয়া উচিত: নুরুল হক

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Nurul Haque Nur, President of Gana Adhikar Parishad, has called for a bicameral parliament in Bangladesh, stating that elections to the upper house must be held under the Proportional Representation (..

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন অপরিহার্য। তিনি দাবি করেন, উচ্চকক্ষের নির্বাচন অবশ্যই পিআর পদ্ধতিতে হওয়া উচিত।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিকে সামনে রেখে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “যদি প্রকৃত অর্থে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হয়, তবে উচ্চকক্ষের নির্বাচন অবশ্যই পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতিতে হওয়া উচিত।

শুক্রবার দুপুরে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর কলেজ মোড়ে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। যশোরে নির্ধারিত এক সমাবেশে যোগ দেওয়ার পথে তিনি এ পথসভায় থেমে বক্তব্য রাখেন।

নুরুল হক নুর বলেন, “আমরা ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলন করেছি। সেই আন্দোলন ছিল ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন। আজকে আমাদের একটাই দাবি—দেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনারা এমন প্রার্থীকে বিজয়ী করুন, যিনি জনগণের অধিকারের কথা বলবেন, জনগণের পাশে থাকবেন এবং সত্যিকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন। তাহলেই আমাদের সংগ্রাম সার্থক হবে।”

তিনি আরও বলেন, গোপালগঞ্জ এমন এক এলাকা যেখান থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অসংখ্য গুণী মানুষের জন্ম হয়েছে। এখানকার মানুষ শুধু খারাপদের নিয়েই পরিচিত নয়, বরং ভালো মানুষেরও বসবাস রয়েছে। তবে যারা অন্যায়-অপরাধ ও ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল, তাদের ক্ষমা করা যাবে না। অবশ্যই তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্যায়ের পথ বেছে না নেয়।

নুরুল হক নুর তার বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সরকার দীর্ঘদিন ধরে এ বাহিনীকে ব্যবহার করেছে আন্দোলন দমন ও ক্ষমতায় টিকে থাকার হাতিয়ার হিসেবে। তার দাবি অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে প্রায় দুই হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চিরজীবনের জন্য অঙ্গহানির শিকার হয়েছেন।

তিনি বলেন, “যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পেটোয়া বাহিনী বানাতে না পারে, এজন্য রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার জরুরি। একই সঙ্গে এ বাহিনীকে জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

এসময় তিনি এনসিপির কয়েকজন নেতার সেনাবাহিনী নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী সব সময় দেশের বিপদে এগিয়ে এসেছে। গোপালগঞ্জে যখন আমরা বিপদের মুখে পড়েছিলাম, তখন সেনাবাহিনীর সদস্যরা জীবন বাজি রেখে আমাদের রক্ষা করেছিলেন। তাই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে না বুঝে কোনো মন্তব্য করা উচিত নয়। সেনাবাহিনী আমাদের জাতীয় গর্ব, তাদের অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

পথসভায় গণঅধিকার পরিষদের গোপালগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি আল আমিন সরদারের সভাপতিত্বে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অপু মুন্সির সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. ফিরোজুর রহমান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক ফারুক হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলা যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা ইব্রাহিম, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি শেখ মোজাহিদ, মুকসুদপুর উপজেলা আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

গণঅধিকার পরিষদের নেতারা একযোগে অভিযোগ করেন, গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে গুম, খুন এবং বিচার বহির্ভূত হত্যার রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। দুর্নীতি, লুটপাট ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছেন।

পথসভাকে কেন্দ্র করে মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী এলাকায় ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পুরো অনুষ্ঠান ঘিরে স্থানীয় মানুষের মধ্যে কৌতূহল দেখা দেয়।

পথসভার পুরো পরিবেশ জুড়েই ছিল নতুন রাজনৈতিক দিকনির্দেশনার আহ্বান, রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকার এবং জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের দাবি।

No comments found