তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলবর্তী ইজমির প্রদেশের বনাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় দিন ব্যাপী তীব্র লড়াই চলছে আগুন নেভানোর জন্য। দমকল বাহিনী, হেলিকপ্টার ও বিমানসহ এক হাজারের বেশি কর্মী কাজ করছেন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। দাবানল এতটাই দ্রুত ছড়াচ্ছে যে, স্থানীয় প্রশাসন চারটি গ্রাম ও দুটি পাড়া থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।
বনমন্ত্রী ইব্রাহিম ইউমাকলির বরাতে জানা গেছে, দাবানল রাতভর ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত বাড়ছে এবং আগুন নেভানোর কাজে জটিলতা তৈরি হয়েছে। আগুন নেভাতে ব্যবহৃত হেলিকপ্টার ও জলবাহী বিমানের সংখ্যা সীমিত থাকায় কাজের গতি ধীরগতিতে চলছে।
দাবানলের কারণে ইজমিরের আদনান মেনদেরেস বিমানবন্দরও অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে বেশ কিছু আবাসিক এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
টিভি ফুটেজে দেখা যায়, ধোঁয়ায় ঢাকা পাহাড়ের ওপর দিয়ে হেলিকপ্টার পানি ছিটাচ্ছে এবং আগুনের সঙ্গে লড়াই করছে। যদিও গতকাল বাতাসের জোরে হেলিকপ্টার নামানো সম্ভব হয়নি। তবে এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তুরস্কের উপকূলীয় অঞ্চল গ্রীষ্মে ক্রমেই শুষ্ক ও গরম হয়ে উঠছে, যার ফলে দাবানলের মতো দুর্ঘটনা নিয়মিত হচ্ছে। গত বছরও একই এলাকায় বড় ধরনের দাবানল হয়েছিল। দক্ষিণ ইউরোপের অন্যান্য দেশেও গ্রীষ্মের দাবদাহে দাবানলের খবর পাওয়া গেছে।
সরকারি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জনগণকে আগাম সতর্ক করে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। দাবানল নিয়ন্ত্রণে পেশাদার দমকল বাহিনীর কাজ এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।
তুরস্কের বনাঞ্চল রক্ষায় এই দাবানলের প্রতিক্রিয়া দেশজুড়ে গুরুত্ব পাচ্ছে। সাধারণ মানুষও সতর্ক রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
আগামী দিনগুলোতে দাবানল পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে আসবে সেটাই এখন প্রধান উদ্বেগের বিষয়। সরকারি আধিকারিকরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন আগুন নেভানোর জন্য।
তুরস্কে দাবানল রোধ ও বন সংরক্ষণে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার পাশাপাশি গ্রীষ্মকালে আগুন লাগা প্রতিরোধের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতে এমন বড় ধরনের ক্ষতি না হয়।
এই দাবানল তুরস্কের বনজ সম্পদ ও মানুষের জীবনযাত্রায় বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।