তরুণ দুই উপদেষ্টার দায়িত্ব ছাড়ার গুঞ্জন, সম্ভাবনা আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Two young advisers of the interim government are rumored to resign to contest the upcoming election, sparking speculation in political circles.

অন্তর্বর্তী সরকারের দুই তরুণ উপদেষ্টা আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে দায়িত্ব ছাড়তে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন চলছে। রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের দুই তরুণ উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম—এই দুই তরুণ মুখকে ঘিরেই সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে। শুক্রবার থেকেই তাদের দায়িত্ব ছাড়ার খবর রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন আকারে ছড়িয়ে পড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য তারা সরকারে আর থাকতে চাইছেন না। রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও নিরপেক্ষতার স্বার্থে তারা পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরেও নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বিষয়টি।

সম্প্রতি একটি টকশোতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের সঙ্গে আলাপকালে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া স্পষ্ট করে জানান, তিনি ২০১৮ সাল থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং ভবিষ্যতেও সরাসরি রাজনীতির ময়দানে থাকতে চান। তার ভাষায়, “যে ব্যক্তি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, সে সরকারের উপদেষ্টা হয়ে দায়িত্ব পালন করা উচিত নয়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আমি সরকার থেকে সরে দাঁড়াব।”

যদিও তিনি কোন দল থেকে প্রার্থী হবেন কিংবা তার রাজনৈতিক অবস্থান কী হবে তা স্পষ্ট করেননি। বিশেষ করে এনসিপিতে যোগদানের গুঞ্জন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, জাতীয় পর্যায়ে সক্রিয় হতে চান এবং এজন্য ঢাকাকে নিজের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক মনে করছেন। তার ভাষায়, “অনেকে মনে করছেন আমি মুরাদনগর থেকে প্রার্থী হব, কিন্তু সেটা সঠিক নয়। আমি জাতীয় রাজনীতিতে কাজ করতে চাই, তাই ঢাকাই আমার জন্য সঠিক জায়গা।”

এছাড়া তিনি ইঙ্গিত দেন, একটি শক্তিশালী মহল নেপথ্যে আওয়ামী লীগকে নতুনভাবে মাঠে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দল বানিয়ে আওয়ামী লীগের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতাদের প্রার্থী করার পরিকল্পনা চলছে বলেও মন্তব্য করেন আসিফ মাহমুদ। তার দাবি, “আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে যৌথভাবে পুনর্বাসনের নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।”

অন্যদিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও পদত্যাগের চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানা গেছে। যদিও এ বিষয়ে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, তিনিও আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এজন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। সাংবাদিকরা তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে আসিফ মাহমুদের ফোনও বন্ধ থাকায় তার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদের পদত্যাগ এবং প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় নির্বাচনী মাঠ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তরুণ নেতৃত্ব হিসেবে তাদের জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। ফলে তারা সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিলে তা দেশের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের নামের একটি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তারা নির্বাচন করলে রাজধানীসহ জাতীয় পর্যায়ে ভোটের মাঠে নতুন তরঙ্গ তৈরি হতে পারে। একইসঙ্গে তাদের পদত্যাগ অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ও কার্যক্রম নিয়েও নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে।

দেশের সাধারণ ভোটারদের মাঝেও বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন। যদি তারা নির্বাচনে অংশ নেন, তবে প্রচলিত রাজনীতির কাঠামোয় পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে।

সবমিলিয়ে, আসন্ন নির্বাচনের আগে এই দুই তরুণ উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, সাধারণ মানুষের মাঝেও আলোচনার ঝড় তুলেছে। এখন দেখার বিষয়, তারা কবে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং কোন দল থেকে নির্বাচনী মাঠে নামেন।

Walang nakitang komento