ওয়াশিংটন, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫: বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর এবার পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে কানাডা, মেক্সিকো ও চীন।
গতকাল শনিবার ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে ঘোষণা দেন যে, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫% এবং চীনের পণ্যের ওপর ১০% শুল্ক আরোপ করা হবে। মঙ্গলবার থেকেই এই শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
কানাডার কড়া জবাব: ১৫৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে পাল্টা শুল্ক!
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কড়া জবাব দিয়েছে কানাডা। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ঘোষণা দিয়েছেন, তারা ১৫৫ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করবে। আগামীকাল থেকেই ৩০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্ক কার্যকর হবে, বাকি ১২৫ বিলিয়নের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে ২১ দিনের মধ্যে।
ট্রুডো বলেন, "কানাডার অর্থনীতির ওপর অন্যায়ভাবে আঘাত এলে আমরা চুপ করে থাকব না। আমাদের জনগণ ও ব্যবসার স্বার্থ রক্ষা করাই আমাদের অগ্রাধিকার।"
মেক্সিকোর পাল্টা ব্যবস্থা: শুল্ক ছাড়াও কঠোর পদক্ষেপ
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাউমও দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের এই অন্যায্য শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে আমরা শক্ত পদক্ষেপ নেব। শুধু পাল্টা শুল্কই নয়, অন্যান্য অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপও নেওয়া হবে।"
এছাড়া, মেক্সিকোর বিরুদ্ধে মাদক পাচারকারী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক রয়েছে বলে ওয়াশিংটনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। এই অভিযোগকে ‘অপবাদ’ বলে অভিহিত করেছেন শেনবাউম।
চীনের হুঁশিয়ারি: ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা
শুল্ক যুদ্ধের উত্তেজনা থেকে চীনও পিছিয়ে নেই। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) নীতির গুরুতর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, "যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ একতরফাভাবে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। চীন দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অনুরূপ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতা, বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তা
বিশ্ববাজারে এই শুল্ক যুদ্ধের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। শেয়ারবাজারে অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে, বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুল্ক যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে তা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আগামী সপ্তাহে এই ইস্যুতে বড় ধরনের আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ট্রাম্প তার অবস্থানে অনড় থাকলে বিশ্ববাণিজ্যে আরও বড় সংকটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
कोई टिप्पणी नहीं मिली