যুক্তরাজ্যের রাজা চার্লসের আমন্ত্রণে সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁকে স্বাগত জানাবেন রাজা চার্লস ও রানি ক্যামিলা।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন। রাজা চার্লস তৃতীয়ের ব্যক্তিগত আমন্ত্রণে ট্রাম্প এই সফর করবেন বলে নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেস।
সোমবার প্রকাশিত এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ১৭ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনদিনব্যাপী এই সফর অনুষ্ঠিত হবে। সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে থাকবেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। সফরের মূল আয়োজক রাজা চার্লস এবং রানি ক্যামিলা উইন্ডসর ক্যাসেলে তাঁকে স্বাগত জানাবেন।
এই সফরের পেছনে রয়েছে একটি কূটনৈতিক ঐতিহ্য। রাজা চার্লস তৃতীয় নিজের হাতে লেখা একটি ব্যক্তিগত চিঠির মাধ্যমে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানান। যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটন সফরের সময় চিঠিটি ট্রাম্পের হাতে তুলে দেন। চিঠি পাওয়ার পর ট্রাম্প একে ‘অসাধারণ সম্মান’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফর করেছেন। ২০১৯ সালে তাঁর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানিয়েছিলেন প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সেবার বাকিংহাম প্যালেসে রাজকীয় আপ্যায়নে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল তাঁকে।
বিশ্ব রাজনীতিতে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন নিয়ে জল্পনা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। যুক্তরাজ্যে তাঁর এই সফরকে অনেকেই দেখছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত হিসেবে। একদিকে রাজতন্ত্র ও কূটনৈতিক সম্পর্কের সম্মান, অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করার চেষ্টা—দুটো দিক থেকেই সফরটি তাৎপর্যপূর্ণ।
ব্রিটিশ রাজপরিবার এই সফরকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। উইন্ডসর ক্যাসেলের ঐতিহাসিক আবহে অনুষ্ঠিত হবে রাজকীয় নৈশভোজ। এ ছাড়া সম্ভাব্যভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজা চার্লসের এই আমন্ত্রণ শুধু সৌজন্য নয়, বরং এটি একটি কৌশলগত সম্পর্কের প্রতীক। ব্রিটেন ও আমেরিকার ঐতিহাসিক জোটকে আরও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টার অংশ এটি।
এদিকে, এই সফর ঘিরে ব্রিটিশ মিডিয়ায় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, প্রেসিডেন্ট পদে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাব্য প্রচারণার অংশ হিসেবেই ট্রাম্প এই সফরটি কাজে লাগাতে পারেন।
যদিও রাজকীয় সফর মূলত কূটনৈতিক সৌজন্যের অংশ, তবে একে কেন্দ্র করে ট্রাম্পের রাজনীতির বার্তাও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে তাঁর এই আন্তর্জাতিক সফর যে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
রাজা চার্লস তৃতীয়ের আমন্ত্রণে ট্রাম্পের এই সফর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে পারে—এমনটাই আশা করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।