পশ্চিমা বিশ্বে নতুন করে অভিবাসন নীতিমালার কঠোরতা নিশ্চিত করতে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর), নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে তিনি ঘোষণা করেন যে, তৃতীয় বিশ্বের সমস্ত দেশ থেকে স্থায়ীভাবে অভিবাসন প্রক্রিয়া স্থগিত করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপকে ট্রাম্প প্রশাসন আমেরিকান নিরাপত্তা ও 'পশ্চিমা সভ্যতা' সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য বলে মনে করছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে দ্রুত ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে জানান, পূর্ববর্তী প্রশাসনের আমলে যেসব অবৈধ অভিবাসীকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, তাদের বিতাড়িত করে দেশের অভিবাসন ব্যবস্থাকে ‘পুনরুদ্ধার’ করা হবে। এই ঘোষণা ট্রাম্পের মূল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে তিনি আমেরিকান স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
রয়টার্স সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, এই আকস্মিক ঘোষণার পেছনের তাৎক্ষণিক কারণ হলো হোয়াইট হাউসের কাছে ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক ঘটনা। সম্প্রতি এক অতর্কিত হামলায় ন্যাশনাল গার্ডের একজন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তদন্তকারীদের প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, এই হামলাটি একজন আফগান নাগরিক দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিহত সৈনিক সারাহ বেকস্ট্রমকে একজন "অসাধারণ তরুণ" হিসেবে সম্মানিত করেছেন এবং তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এই ঘটনার পর থেকেই অভিবাসন নীতিমালায় কঠোরতা আনা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে পুনরুদ্ধার করাই এই নতুন পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে, আফগানিস্তানসহ মোট ১৯টি দেশের গ্রিন কার্ডধারীদের অভিবাসন নথি নতুন করে খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই স্ক্রুটিনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সম্ভাব্য ঝুঁকি সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করা হবে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে অভিবাসনপ্রত্যাশী এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।



















