ইরানের সামরিক প্রস্তুতি নতুন দিগন্তে: স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তায় বিশাল মহড়া
একটি অজ্ঞাত স্থানে সম্প্রতি বিশাল সামরিক মহড়া চালিয়েছে ইরান। এই মহড়ার লক্ষ্য ছিল পারমাণবিক স্থাপনাসহ স্পর্শকাতর অবকাঠামোগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দেশটির সামরিক দপ্তর প্রকাশিত ছবি ও এএফপির তথ্য অনুযায়ী, ইরান তার সামরিক সক্ষমতা আরও উন্নত করার চেষ্টা করছে।
ট্রাম্পের কঠিন অবস্থান: ইরানের সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
বিশ্লেষকদের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ ইরানের জন্য একটি কঠিন সময় হতে পারে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা প্রকাশ্যে ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো এবং গুরুত্বপূর্ণ তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর বিষয়ে আলোচনা করছেন। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এসব হুমকিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনি বরং সামরিক মহড়ার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা জোরদার করছেন।
পারমাণবিক বোমার বিতর্ক: তেহরানের দ্বিমুখী নীতি
ইরানের রাজনৈতিক মহলে দুটি মতবাদ দেখা যাচ্ছে। একটি দল পারমাণবিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় উন্মুক্ত হলেও, অন্য দল পারমাণবিক বোমা তৈরির ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে এই মতবাদের গুরুত্ব বাড়ছে। বিশ্লেষক নাইসান রাফাতি মনে করেন, যদি তেহরান আলোচনার পথে যায়, তবে সেটি কার্যকর করতে ওয়াশিংটনেরও আগ্রহ থাকা প্রয়োজন।
নতুন চুক্তির সম্ভাবনা: জেসিপিওএর পরিবর্তন কী আনবে?
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি (জেসিপিওএ) প্রত্যাখ্যান করে ট্রাম্প কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। এখন এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান আলোচনার পথে এগোতে চান। চলতি মাসেই ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের উপপ্রধান এলি গেরানমায়েহ বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো এবার যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নীতির সঙ্গেই একমত হতে পারে। স্ন্যাপব্যাক নীতির অধীনে ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ক্ষমতা রাখছে পশ্চিমা দেশগুলো।
শেষ কথা: ইরানের ভবিষ্যৎ কী?
ইরান এখনো পারমাণবিক বোমা তৈরি করেনি। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা এবং সেন্ট্রিফিউজের সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে দেশটি আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। ইসরায়েলের হুমকি এবং আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যেও ইরান তার কৌশল পরিবর্তনে অনীহা দেখাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির গতিপথ স্পষ্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
শেষ পর্যন্ত, ইরানের এই অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।
コメントがありません