close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ট্রাম্পের বক্তব্য লক্ষ-কোটি মুসলিমের অনুভূতিতে আঘাত করেছে ,ইরান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ট্রাম্পের বক্তব্য বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের অবমাননা করেছে বলে জানায় ইরান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি কূটনৈতিক রীতিনীতির লঙ্ঘন ও ইরানের সার্বভৌমত্বে সরাসরি হস্তক্ষেপ।..

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। যেখানে তিনি প্রকাশ্যে দাবি করেন—ইসরায়েল ও মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলি খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল, এবং সেই পদক্ষেপে তিনি নিজেই বাধা দিয়েছিলেন। এই বক্তব্যকে “অপমানজনক, কূটনৈতিক শিষ্টাচারবিরোধী এবং ইচ্ছাকৃত উসকানি” হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ট্রাম্পের এ মন্তব্য শুধু জাতিসংঘ সনদের মৌলিক নিয়ম ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক আচরণ লঙ্ঘনই করে না, বরং এটি লক্ষ-কোটি মুসলিমের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হানে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এই বক্তব্য এক সম্মানিত সভ্যতা ও সংস্কৃতির ওপর সরাসরি আক্রমণ। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ও রাজনৈতিক অহংকারের বহিঃপ্রকাশ।”

ইরান আরও বলেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ধরনের অশোভন মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রকে একটি অবিশ্বস্ত রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরে, যা শান্তিপূর্ণ সংলাপ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার পথে বড় বাধা।

গত ২২ জুন ইসরায়েলের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। ইরান দাবি করেছে, এই হামলা জাতিসংঘ সনদ এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন। ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

এর মাত্র দুই দিন পর ট্রাম্পের দেওয়া অস্ত্রবিরতির ঘোষণা পরিস্থিতিকে আরও ধোঁয়াশাপূর্ণ করে তোলে। তেহরানের ভাষায়, “একদিকে আপনি আমাদের নেতাকে হত্যার কথা বলেন, অন্যদিকে আবার অস্ত্রবিরতির কথা বলেন—এটা দ্বিচারিতা।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও দাবি করেছে, “যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই নিজেদের উসকানিমূলক আচরণ বন্ধ করতে হবে এবং দায়িত্বশীল আন্তর্জাতিক আচরণে ফিরে আসতে হবে। অন্যথায় এর দায়-দায়িত্ব তাদেরই বহন করতে হবে।”

তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানায়, যেন তারা শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামোয় জবাবদিহি করে এবং ভবিষ্যতে এমন কর্মকাাণ্ড থেকে বিরত থাকে।

ট্রাম্পের বিতর্কিত এই মন্তব্য মুসলিম বিশ্বেও ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন মুসলিমপ্রধান দেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, “এই বক্তব্য শুধুমাত্র ইরানের জন্য নয়—সমগ্র মুসলিম উম্মাহর আত্মমর্যাদার ওপর হামলা।”

ইরান বলেছে, এই ধরণের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর ফল বয়ে আনবে। মধ্যপ্রাচ্যে তাদের কূটনৈতিক অবস্থান আরও নড়বড়ে হয়ে যাবে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা আরও কঠিন হয়ে উঠবে।

ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্য কেবল একটি নেতাকে অপমানের বিষয় নয়—এটি একটি সংস্কৃতি, একটি জাতি এবং কোটি মুসলিমের অস্তিত্ববোধে আঘাত। ইরান সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তারা এই অপমান কখনো ভুলে যাবে না এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে এর জবাব দেবে। মার্কিন প্রশাসনকে এখনই চিন্তা করতে হবে—এই মন্তব্য ও পদক্ষেপের ভবিষ্যৎ প্রতিক্রিয়া কতটা বিস্ফোরক হতে পারে।

Không có bình luận nào được tìm thấy