close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ট্রাম্প–নেতানিয়াহু বৈঠকে কি গাজা যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি হতে পারে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির ইস্যুতে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। যুক্তরাষ্ট্র ও হামাসের মধ্যস্ততায় চুক্তির সম্ভাবনা বাড়ছে—এ সপ্তাহেই বড় অগ্রগতি আসতে পারে।..

গাজায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান যুদ্ধ, জিম্মি সংকট এবং মানবিক বিপর্যয়ের আবহে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যকার আসন্ন বৈঠক নিয়ে দারুণ আগ্রহ তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। সোমবার ওয়াশিংটনে এই দুই নেতার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে গাজা যুদ্ধবিরতি, জিম্মি মুক্তি ও হামাসের কার্যক্রম।

নেতানিয়াহু রোববার সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিশ্বাস করি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমার আলোচনা গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির পথে বাস্তব অগ্রগতি ঘটাবে। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরায়েল ইতোমধ্যে কিছু শর্ত মেনে নিয়েছে এবং আলোচকদের সেই অনুযায়ী নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলি ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় বসেছেন। সেই আলোচনায় হামাসের প্রতিনিধিরাও অংশ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন যুদ্ধবিরতি চুক্তি খুব শিগগিরই বাস্তব হতে পারে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও আশাবাদী। নিউ জার্সিতে গলফ খেলে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে, হামাসের সঙ্গে একটি কার্যকর চুক্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। এ সপ্তাহেই জিম্মি মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসতে পারে।

হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ছয় মাসের মধ্যেই তৃতীয়বারের মতো নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প। এই ঘনঘন সাক্ষাৎ দুই নেতার রাজনৈতিক ঐক্য ও কৌশলগত সমঝোতার ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে ইরানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাত ও মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার পুনঃসংজ্ঞায়নে তাদের এই ঘনিষ্ঠতা গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে হামাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকে তারা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এবং “ইতিবাচক মনোভাব” নিয়েই আলোচনায় অংশ নিয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, নির্দিষ্ট কিছু মানবিক শর্ত ও যুদ্ধবিরতি কাঠামো মেনে নেওয়া হলে একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা সম্ভব।

তবে সব পক্ষের মধ্যে এখনও মতপার্থক্য বিদ্যমান। নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন, “হামাসকে নিরস্ত্র না করা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে না। অন্যদিকে, হামাসের আলোচকেরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তারা কোনোভাবেই নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে আলোচনা করতে রাজি নয়।

ইসরায়েলি রাজনীতির ভেতরেও বিভাজন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ওপর যুদ্ধ থামানোর চাপ বাড়ছে আন্তর্জাতিক মহল থেকে, তবে তাঁর ডানপন্থী জোটের কট্টরপন্থী নেতারা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। অন্যদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সারের মতো নেতারা যুদ্ধবিরতির পক্ষে যুক্তি দিচ্ছেন, মানবিক ও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে।

নেতানিয়াহু এবং ট্রাম্প বৈঠকে ইরান প্রসঙ্গেও আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে। নেতানিয়াহু বলেছেন, তেহরান যাতে কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।” তিনি আরও বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান অস্থিরতা শান্তির নতুন চক্র তৈরি করার সুযোগ এনে দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক কেবল গাজা যুদ্ধবিরতির অগ্রগতির জন্যই নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল জোটের নতুন পরিধি নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠককে কেন্দ্র করে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে উজ্জ্বল হয়েছে। হামাসের ইতিবাচক মনোভাব, ইসরায়েলের কিছু শর্তে সম্মতি, এবং যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় কূটনৈতিক অবস্থান — এই তিনের সমন্বয়ে এ সপ্তাহেই বড় কোনো ঘোষণা আসতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে।

לא נמצאו הערות