close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

তিস্তা নদীতে হঠাৎ পানির ঢল, তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি—বন্যার মুখে কুড়িগ্রামসহ চার জেলা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Heavy upstream rain and hill runoff are rapidly swelling the Tista River. With water nearing danger level, residents of Kurigram, Rangpur, Lalmonirhat, and Nilphamari fear flooding in low-lying areas.

তিস্তা নদীতে হঠাৎ পানি বাড়ছে, চার জেলার মানুষ আতঙ্কে
উজান থেকে আসা প্রচণ্ড পাহাড়ি ঢল এবং টানা ভারী বর্ষণের ফলে হঠাৎ করেই তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কুড়িগ্রামের তিস্তা পয়েন্টে সোমবার (২১ জুলাই) সকাল ৯টায় নদীর পানি ২৯ দশমিক ৯ সেন্টিমিটারে পৌঁছায়, যা বিপদসীমা ২৯.৩১ সেন্টিমিটারের কাছাকাছি। ফলে নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে চর এলাকার শতাধিক মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

এই পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার তীরবর্তী অনেক নিচু ফসলি জমি ইতোমধ্যেই পানিতে তলিয়ে গেছে। দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে যাতে করে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যেতে পারে।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, নদীর এই পানি প্রবাহ রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী এবং লালমনিরহাট জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। ইতোমধ্যে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা এলাকায় অনেক ধান ক্ষেত ডুবে গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। একই অবস্থা কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলেও।

পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, "তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা যে কোনো সময় বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। কিছু কিছু নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি প্লাবিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও তা স্বল্পমেয়াদি হতে পারে।"

 

কুড়িগ্রাম পাউবো নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা অববাহিকায় ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রোববার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রংপুরের কাউনিয়া গেজ স্টেশনে পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। সেই সময় পানি বিপদসীমার মাত্র ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পাউবোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা এবং দুধকুমার নদীগুলোর পানি আরও বাড়বে আগামী ২৪ ঘণ্টায় এবং আগামী দুই দিন তা স্থিতিশীল থাকতে পারে।

 

রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা এলাকার বাসিন্দা মিলন বলেন, "পানি বাড়ছে ঠিকই, তবে এখনো বন্যা হওয়ার মতো নয়।" তবে একই সময় লালমনিরহাটের গড্ডিমারী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নুর ইসলাম জানান, রোববার সকালের টানা বৃষ্টির পর উজান থেকেও পানি আসছে, যার ফলে নিচু এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, “বন্যা হলে কয়েকটি ওয়ার্ডে মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। এখনই কিছু পরিবার পানিবন্দী হয়ে গেছেন।”

 

ডালিয়া ব্যারাজের লেভেল পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, “পানির চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। শুক্রবার রাত থেকেই পানি বাড়তে শুরু করেছে, তাই ৪৪টি গেটই খুলে রাখা হয়েছে।” পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, "উজানের পানি ও বৃষ্টিপাত একসাথে তিস্তার পানি বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণে আছি।"

 

সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পানি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ত্রাণ ও আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার কাজ শুরু করেছে।

Nenhum comentário encontrado