close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে রংপুর অঞ্চলে নতুন আশার সঞ্চার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
The Teesta Mega Project brings new hope to the Rangpur region as authorities move to curb river erosion and flood risks. With government assurances and Chinese partnership, the project promises econom..

রংপুরসহ তিস্তা নদীপাড়ের ছয় জেলার মানুষের দীর্ঘ দিনের ভাঙন ও বন্যা সমস্যা সমাধানে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে জোরদার আন্দোলন চলছে। সরকারি আশ্বাস ও চীনা অংশীদারিত্বে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়িত হলে এলাকার অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।

রংপুর অঞ্চলের মানুষের দুঃখগাথার নাম তিস্তা নদী। প্রতিবছর বর্ষাকালে বন্যা ও খরার সময় পানির অভাবে এই নদী রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলা এলাকা নিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা নদীর ভাঙন ও বন্যা প্রতিরোধে মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন একমাত্র সমাধান বলে গণ্য হচ্ছে।

এ নিয়ে তিস্তা পাড়ের পাঁচ জেলার ১২ উপজেলায় মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান ও বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন-সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি স্মারকলিপি জমা দিয়ে দ্রুত প্রকল্পের বাস্তবায়ন দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি তিস্তা পাড়ের মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা একাধিকবার চীনা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ এগিয়ে চলছে এবং আমরা এই প্রকল্পের গুরুত্ব বুঝি। এটি বাস্তবায়িত হলে নদী ভাঙন ও বন্যার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।”

গত ২২ জুলাই চীন দূতাবাসের রাজনৈতিক বিভাগের কর্মকর্তা জং জিং তিস্তা নদীর গঙ্গাচড়া এলাকা পরিদর্শন করেন এবং বিএনপির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি জানান, ড. ইউনূস চীন সফরে গিয়ে রংপুরে আধুনিক হাসপাতাল স্থাপনের বিষয়ে কথা বলেছেন এবং চীন সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে।

পাওয়ার চায়নার সিনিয়র এক্সপাট মকবুল হোসেন গত ১০ মার্চ বলেন, “তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তরের ৫ জেলার ১১০ কিলোমিটার নদীতে প্রায় ১৩৩০ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং, বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত, গ্রোয়েন নির্মাণ এবং ভূমি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “খননকৃত মাটি দিয়ে নদীর তীরবর্তী ভূমি পুনরুদ্ধার করে সেখানকার জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল, পাওয়ার প্লান্ট, স্যাটেলাইট টাউন নির্মাণসহ কৃষি ও সেচ ব্যবস্থা উন্নয়ন করা হবে। ফলে নদী ভাঙন থেকে ১১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা পাবে।”

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উল্লেখ করেন, “তিস্তা নদীর প্রকল্পে ১২ হাজার কোটি টাকার ব্যয় ধরা হয়েছে, যা সরকার ও চীন উভয়ই দেবে। এটি দশ বছরের একটি পরিকল্পনা, যেখানে পাঁচ বছরে সেচ, ভাঙনরোধ ও বাঁধ নির্মাণকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।”

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান জানান, “মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে এবং ভাঙন প্রবণ ১৯ কিলোমিটার এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।”

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নদী ভাঙন ও বন্যার ফলে সৃষ্ট ক্ষতি কমে যাবে এবং নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবন পুনরুজ্জীবিত হবে। নদীভাঙন রোধ, পানি নিয়ন্ত্রণ ও ভূমি পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে, যা শত হাজারো মানুষের জীবনমান পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে।

Nessun commento trovato