close
কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!
টিকা সংকটে প্রবাসীদের রুখে দেওয়া প্রতিবাদ: পান্থপথে সড়ক অবরোধ, সৃষ্টি হলো তীব্র যানজট!


বুধবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫ - রাজধানী ঢাকা, পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের সামনে আজ ভোরের আলো নিভিয়ে দিয়েছে এক অস্বাভাবিক দৃশ্য। প্রায় তিন শতাধিক প্রবাসী, যাদের অধিকাংশই সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে কর্মরত, একযোগে সড়ক অবরোধ করেন। তাদের প্রতিবাদের মূল কারণ, মেনিনজাইটিসের টিকার সংকট। এই টিকা সৌদি আরবসহ অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যগামী প্রবাসীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, কিন্তু তাদের প্রয়োজনীয় টিকা পেতে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলস্বরূপ, পান্থপথ এলাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয় এবং প্রবাসীদের ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিবাদকারীরা বলছেন, "টিকা পেতে হাসপাতালের কাছে ছুটেও আমরা কিছুই পাচ্ছি না!"
সরকারি নির্দেশনায় সৌদি আরব এবং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে যাত্রা করার জন্য প্রবাসীদের মেনিনজাইটিসের টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও তাদের নতুন নির্দেশনায় এই টিকা নেওয়ার বিষয়টি প্রবাসীদের জন্য বাধ্যতামূলক করেছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে এই টিকা প্রদান করা হলেও, প্রবাসীরা অভিযোগ করছেন যে, তারা নিয়মিতভাবে সঠিক সময় ও স্থানে উপস্থিত থেকেও টিকা পাচ্ছেন না।
হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ সংকট: টিকার অভাব
এমন অবস্থায় আজ সকালে যখন প্রবাসীরা জানতে পারেন, পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে তাদের জন্য মেনিনজাইটিসের টিকা রয়েছে, তখন তারা সেখানে পৌঁছান। কিন্তু তাদের হতাশা চরমে পৌঁছায়, কারণ এখানে এসে তারা জানতে পারেন যে, হাসপাতালেও টিকার সংকট চলছে। স্কয়ার হাসপাতালের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. ফয়সাল জামান জানিয়েছেন, "প্রতিদিন আমাদের হাসপাতালে ১০ থেকে ১৫টি টিকা দেওয়া হয়, কিন্তু এই মুহূর্তে কোনো টিকা নেই। আমাদের কাছে শেষ টিকাগুলো গতকাল পর্যন্ত ছিল। রেডিয়েন্ট ফার্মার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, কিন্তু নতুন টিকা আসতে অন্তত ১০-১৫ দিন সময় লাগবে।"
প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ, প্রশাসনকে দুষছেন
প্রবাসীদের এই আন্দোলনের কারণে পান্থপথ এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়ে পড়ে। আন্দোলনরত প্রবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন, "এটা আমাদের জন্য শুধু এক টিকা নয়, আমাদের জীবিকার বিষয়। আমরা দ্রুত এ টিকা নিয়ে যেন সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর জন্য রওনা দিতে পারি।" তারা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন দ্রুত টিকার সংকট নিরসন করা হয়।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জুবায়ের সংবাদমাধ্যমকে জানান, "প্রবাসীদের অভিযোগ অনুযায়ী, বেশ কয়েকটি হাসপাতাল তাদেরকে স্কয়ার হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, প্রতিদিন ১০-১৫টি টিকা দেওয়া হলেও এখন তারা আরও অনেক বেশি সংখ্যক প্রবাসীর টিকা দিতে পারছে না।"
এদিকে, এ সমস্যা নিয়ে রেডিয়েন্ট ফার্মার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা জানিয়েছে, টিকার আমদানি করতে আরও ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রবাসীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
শেষ কথা: জরুরি পদক্ষেপের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান
এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকার এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে প্রবাসী ভাই-বোনদের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। টিকার অভাব দূর করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে, আগামী দিনে আরও বড় সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ মুহূর্তে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হলেও, আশার আলো এই যে, কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমস্যার সমাধানে কাজ করছে।
Tidak ada komentar yang ditemukan