তিব্বতে বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে চীনের পদক্ষেপ: ঝুঁকিতে ভারত ও বাংলাদেশ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থ্রি গর্জেস ড্যাম এবং নতুন তিব্বত প্রকল্পের সম্ভাবনা চীন বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থ্রি গর্জেস ড্যামের ৩০
বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থ্রি গর্জেস ড্যাম এবং নতুন তিব্বত প্রকল্পের সম্ভাবনা চীন বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থ্রি গর্জেস ড্যামের ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে। তিন দশকে প্রকল্পটি উৎপাদন করেছে ১.৭ ট্রিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ। এটি শুধু চীনের শক্তি খাতে বিপ্লব আনেনি, বরং সাশ্রয় করেছে ৫৫ কোটি টন কয়লা এবং কমিয়েছে প্রায় ১৪৯ কোটি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ। ২০০৩ সালে প্রথম ইউনিট চালু হওয়ার পর প্রকল্পটি ৭০টি বন্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছে এবং ৩৬০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি সরবরাহ করেছে, যা পানীয় জল ও সেচের কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। এই প্রকল্প চীনের অর্থনীতি ও পরিবেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। ইয়ারলুং ঝাংবো নদীতে নতুন প্রকল্প থ্রি গর্জেস ড্যামের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার চীন পরিকল্পনা করছে আরও বৃহৎ প্রকল্প, যা তিব্বতের সীমানায় ইয়ারলুং ঝাংবো নদীতে গড়ে তোলা হবে। এই নদীটি ভারত ও বাংলাদেশে যথাক্রমে ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত। নতুন এই প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪.৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রকল্পের কারণে প্রায় ১৪ লাখ লোককে পুনর্বাসিত করতে হবে। প্রাকৃতিক সুবিধা ব্যবহার করেই প্রকল্পটির পরিকল্পনা করা হয়েছে। নদীর নির্ধারিত স্থানে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ২০০০ মিটারের বেশি উচ্চতা থেকে পানি পতিত হয়, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপুল সম্ভাবনা তৈরি করে। পরিবেশগত ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ চীনের দাবি, এই প্রকল্প তাদের কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে সহায়ক হবে এবং সেচ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে। তবে ভারত ও বাংলাদেশের জন্য এটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করলে জলপ্রবাহে পরিবর্তন আসতে পারে, যা এই দুই দেশের পানি সরবরাহ এবং কৃষি ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে। চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, প্রকল্পটি পরিবেশগত উন্নয়ন এবং স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অসংখ্য কারিগরি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের অবস্থান ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবাহে কোনো পরিবর্তন হলে তা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং বাংলাদেশের নিম্নাঞ্চলের কৃষি, নদীর নাব্যতা এবং জীববৈচিত্র্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ভারত এবং বাংলাদেশ ইতিমধ্যে এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বিষয়টি আন্তর্জাতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের দাবি জানিয়েছে। চীনের নতুন জলবিদ্যুৎ প্রকল্প শুধু কারিগরি উৎকর্ষতার প্রতীক নয়, এটি দক্ষিণ এশিয়ার ভৌগোলিক এবং কূটনৈতিক ভারসাম্যের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠতে পারে। হেডলাইন: “তিব্বতে চীনের মেগা বাঁধ প্রকল্প: ঝুঁকিতে ব্রহ্মপুত্রের ভবিষ্যৎ, শঙ্কায় ভারত-বাংলাদেশ”
কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি


News Card Generator