থ্রি-পিস বাইক: ঢাকার রাজপথে ‘নিউ মুভি ট্রেলার’—হেলমেট? ওটা কী জিনিস!..

Sumon Hawlader avatar   
Sumon Hawlader
গুলশানের ব্যস্ত সড়কে তিন তরুণের বাইকে স্টান্ট—নিরাপত্তা নয়, তাদের কাছে স্টাইলই মুখ্য। পুলিশের থাবায় থেমে গেল এই ‘লাইভ ট্রাফিক ট্র্যাজেডি’।..

সুমন হাওলাদার
১৯ মে ২০২৫, ঢাকা

রবিবার সন্ধ্যা, রাজধানীর গুলশান। শহরজুড়ে অফিসফেরত মানুষের ব্যস্ততা, আর তারই মাঝে হঠাৎ এক দৃশ্য—যেন ঢাকার রাজপথে চলছে কোনো অ্যাকশন সিনেমার শ্যুটিং! একটি মোটরসাইকেলে তিন তরুণ, যার মধ্যে মাত্র একজনের মাথায় হেলমেট। বাকিদের দেখে মনে হচ্ছিল, হেলমেট না পরার মধ্যে একধরনের ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ লুকিয়ে আছে।

তাদের বাইক চালানোর গতি ও ভঙ্গি ছিল এতটাই বেপরোয়া যে পথচারীদের চোখ ছাপিয়ে পৌঁছে যায় ট্রাফিক পুলিশের নজরে। একপর্যায়ে বাইকটি থামিয়ে পুলিশ কাগজপত্র দেখতে চায়। প্রশ্ন করে—“এইটা কি টিকটকের স্টান্ট, না লাইভ ‘মুভি প্রিমিয়ার’?”

জবাবের আগেই ট্রাফিক সার্জেন্ট মোবাইল বের করে ছবি তুলতে শুরু করেন, ভিডিও ধারণও চলতে থাকে। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। এ সময় পথচারীদের মধ্যে হাস্যরসের ছড়াছড়ি।

পথচারী সোহাগের মন্তব্য ছিল তীক্ষ্ণ:
“ওরা বাইক চালায় এমনভাবে, যেন নিজেরাই অ্যাভেঞ্জার্স! অথচ হেলমেট নেই, লাইসেন্স নেই—শুধু সাহসটাই আছে। আমরা ভয় পাই, আর ওরা গর্ব করে!”

এ দৃশ্য যেন নগরের ট্র্যাফিক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি—যেখানে আইন নয়, আধুনিক ‘স্টাইল’ই হয়ে উঠেছে তরুণদের চালিকাশক্তি। অনেকেই হেলমেট না পরার অজুহাত দেন—‘হেয়ারস্টাইল নষ্ট হবে’। অথচ এই স্টাইল বজায় রাখতে গিয়ে হয়ত হারিয়ে যায় সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ—জীবন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন:
“শুধু আইন প্রয়োগ নয়, চাই সড়ক ব্যবহারে সচেতনতা ও শালীনতা। বাইক স্টান্ট কোনো বীরত্ব নয়, এটি ভয়ংকর দায়িত্বহীনতা।”

পুলিশ শেষ পর্যন্ত বাইকের কাগজপত্র জব্দ করেছে, প্রাথমিকভাবে মামলা হয়েছে বলেই জানা গেছে। তবে প্রশ্নটা রয়ে গেল—এই ‘থ্রি-পিস বাইক গ্যাং’ কি ভবিষ্যতে হেলমেট পরে রাস্তায় নামবে, নাকি আবারও ঢাকার রাজপথে ‘নিউ মুভি ট্রেলার’ শ্যুট করতে বের হবে?

শেষ কথা:
হেলমেট বাঁচায় শুধু মাথা নয়, জাগিয়ে তোলে বিবেকও—যদি সেটা ব্যবহারের ইচ্ছে থাকে।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator