close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

তেঁতুলিয়া নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন, বিএনপি নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া নদী থেকে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের জনসাধারণ। রোববার দুপুর ১২টা
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া নদী থেকে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের জনসাধারণ। রোববার দুপুর ১২টায় উপজেলার ভান্ডারিয়া বাজারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শতাধিক ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনের মূল দাবিগুলো: নদী ভাঙনের ভয়াবহতা থেকে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নকে রক্ষার লক্ষ্যে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের জোর দাবি তোলা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি মো. রুহুল রাঢ়ী, জামায়াতের সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান হাওলাদার, স্থানীয় বাসিন্দা মো. জহিরুল ইসলাম, মো. শাহীন পণ্ডিত ও নাজমুল ইসলামসহ আরও অনেকে। বক্তাদের অভিযোগ: বক্তারা ক্ষোভের সাথে জানান, তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী এলাকায় ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি, অতীতেও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা চরব্যারেট এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলন করতেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর, ভোলা ও বাউফলের একটি শক্তিশালী চক্র নতুন করে অবৈধ বালু উত্তোলনে জড়িয়ে পড়েছে। এ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব তারেক নাঈম ও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুল হাওলাদার। ঘটনার নাটকীয় মোড়: শনিবার গভীর রাতে স্থানীয় জনগণ গোলাপ লোড ড্রেজার নামে একটি ড্রেজার এবং একটি বাল্কহেড জব্দ করে। এই ড্রেজারটি উদ্ধার করতে তারেক নাঈম নিজেই দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তবে স্থানীয়দের তীব্র প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হন। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: স্থানীয়দের মতে, আগে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক ওরফে আলকাছ মোল্লা অবৈধ বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা আজিজুল হাওলাদার এই অবৈধ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেন। অভিযোগ রয়েছে, বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় আজিজুল হাওলাদার স্থানীয় বাসিন্দাদের মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়ে আসছেন। অভিযোগের জবাব: অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন আজিজুল হাওলাদার। তিনি বলেন, "কোনো অবৈধ কাজে আমরা জড়িত নই। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের নাম জড়ানো হচ্ছে।" অন্যদিকে, তারেক নাঈমের বক্তব্য, "আমরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছি না। মূল ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করছি।" তবে বালু মহাল ইজারা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "সেটা অফিস বলতে পারবে।" প্রশাসনের অবস্থান: এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, "অবৈধভাবে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" তেঁতুলিয়া নদীর অবৈধ বালু উত্তোলন শুধু পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণই নয়, এটি রাজনৈতিক এবং সামাজিক অস্থিরতারও জন্ম দিচ্ছে। প্রশাসন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকরা।
コメントがありません