close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

তারেক রহমানসহ খালাস পাবেন ডা. জুবাইদা, আশা আইনজীবীর

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
২০০৭ সালের বহুল আলোচিত দুর্নীতি মামলায় তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের সাজা বাতিল হতে পারে বলে আশা করছেন তাদের আইনজীবীরা। আপিল শুনানির শেষ পর্যায়ে এসে উঠে এসেছে নতুন যুক্তি ও পুরনো রাজনৈতিক প্রেক্ষা..

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় নাটকীয় মোড় নিয়েছে। দীর্ঘদিন পর আদালতে আপিল শুনানির পর তাদের খালাস পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। সোমবার (২৬ মে) হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সামনে এই মন্তব্য করেন তিনি।

সেইসঙ্গে তিনি ইঙ্গিত দেন, যদি আদালত ডা. জুবাইদাকে নির্দোষ প্রমাণ করেন, তাহলে একই যুক্তিতে আপিল না করলেও তারেক রহমানও খালাস পেতে পারেন। এ সংক্রান্ত অতীত নজির আদালতে তুলে ধরা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চ আগামী ২৮ মে রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছেন। দুদকের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান। অপরদিকে, আসামিপক্ষের হয়ে শুনানি পরিচালনা করেন এস এম শাহজাহান, কায়সার কামাল ও জাকির হোসেন ভূঁইয়া।

২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানায় দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক জহিরুল হুদা মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং তার মাতা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং তা গোপন করেছেন।

এই মামলার বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান রায় দেন। রায়ে তারেক রহমানকে ২৭(১) ধারায় ছয় বছর ও ২৬(২) ধারায় তিন বছর, সর্বমোট নয় বছরের কারাদণ্ড এবং তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে, ডা. জুবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তীতে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাঁর সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।

২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান জুবাইদা রহমান। প্রায় ১৭ বছর পর চলতি বছরের ৬ মে দেশে ফিরে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। ১৪ মে হাইকোর্ট আপিল গ্রহণ করে জামিন মঞ্জুর করে এবং জরিমানাও স্থগিত করে। এরপর ২২ ও ২৬ মে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহজাহান আদালতে বলেন, এই মামলায় যে সম্পত্তিগুলোকে অবৈধ বলা হচ্ছে, সেগুলো আসলে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দপ্রাপ্ত সম্পত্তি। সেনানিবাসের মইনুল রোডের বাড়িটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারকে সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। গুলশানের বাড়িটিও ৩৩ টাকায় বরাদ্দপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি।

তিনি আরও বলেন, কোনো সম্পত্তি বিদেশে নেই, কিংবা কোনো অর্থ অসাধু উপায়ে অর্জিত নয়। অথচ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে এই সম্পদ তারেক রহমানের অবৈধ উপায়ে অর্জিত।

তারেক রহমানের খালাস প্রসঙ্গে আইনজীবী শাহজাহান উল্লেখ করেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, জিয়া অরফ্যানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার মতো উচ্চপ্রোফাইল মামলাতেও খালাসের নজির রয়েছে, যেখানে সরাসরি আপিল না থাকলেও আদালত যুক্তি দেখিয়ে আসামিদের খালাস দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমরা আদালতকে বলেছি, যদি জুবাইদা রহমান খালাস পান এবং যদি আদালত দেখেন তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ প্রমাণ হয়নি, তাহলে তাকেও খালাস দেওয়া সম্ভব। এই যুক্তির ভিত্তিতেই আমরা আশা করছি, আগামী ২৮ মে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।”

নির্ধারিত তারিখে মামলার রায়ে যদি আদালত তাঁদের খালাস দেন, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তা একটি বড় ধরনের মোড় আনতে পারে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।



দুই যুগের পুরনো এই মামলার পরিণতি এখন নির্ভর করছে হাইকোর্টের রায়ের ওপর। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই রায় ঘিরে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। আগামী ২৮ মে'র রায় শুধু তারেক-জুবাইদার জন্য নয়, বরং দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Inga kommentarer hittades