close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

তামার উপর ৫০% শুল্ক ঘোষণা ট্রাম্পের, বড় ধাক্কায় ভারত ও ব্রাজিল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
U.S. President Donald Trump has imposed a 50% import tariff on copper, directly impacting India and Brazil. Experts warn this move could disrupt India’s $360 million copper exports to the U.S., with m..

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তামা আমদানিতে ৫০% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে বিপাকে পড়বে ভারত, যারা যুক্তরাষ্ট্রে শত কোটি টাকার তামা রপ্তানি করে। একই সঙ্গে ওষুধেও আসতে পারে ২০০% শুল্ক।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। নতুন করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়ে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে আমদানিকৃত তামার উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। তাঁর এই ঘোষণা শুধু আমেরিকার বাজারেই নয়, প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে ভারতের মতো বৃহৎ তামা রপ্তানিকারক দেশের উপরেও।

এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ট্রাম্প বার্তা দিয়েছেন, আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি যে কোনো অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। হোয়াইট হাউস থেকে সরাসরি দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তার মূল্যায়নের ভিত্তিতেই তামার উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প যে ২৩২ নম্বর ধারার বাণিজ্যিক নিরাপত্তা আইন উল্লেখ করেছেন, সেটিই মূলত তাঁকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সহায়তা করেছে। এই ধারার মাধ্যমে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ উৎপাদন শিল্পকে নিরাপদ রাখতে আমদানি সীমিত করার আইনগত ভিত্তি তৈরি হয়।

ভারত প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩৬০ মিলিয়ন ডলারের তামা ও তামাজাত পণ্য রপ্তানি করে থাকে। সামগ্রিকভাবে বিশ্ববাজারে ভারতের তামা রপ্তানির পরিমাণ ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের ঘোষণাটি ভারতের রপ্তানি খাতের জন্য বিশাল ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। বিশেষত ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক গাড়ি এবং সামরিক খাতে ব্যবহৃত তামার রপ্তানির উপর সরাসরি প্রভাব পড়বে।

শুধু তামা নয়, ট্রাম্প আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছেন — ওষুধ আমদানির উপর ২০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হতে পারে। এটা কার্যকর হলে ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভয়াবহ বিপদ তৈরি হবে। ভারত-আমেরিকার মধ্যে বড় আকারের ওষুধ বাণিজ্য রয়েছে, এবং এই খাতটি ইতিমধ্যেই বহু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মুখে।

এবারের ঘোষণায় শুধু ভারতই নয়, ব্রাজিলও রয়েছে ট্রাম্পের টার্গেটে। ব্রাজিল থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ব্রিকস সম্মেলনে আমেরিকার শুল্কনীতির সমালোচনা করা হয়েছিল, যার প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভাকে লেখা এক চিঠিতে ট্রাম্প সরাসরি অতিরিক্ত শুল্কের ঘোষণা দিয়েছেন।

লুলার বিরুদ্ধে তাঁর আগের প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বিরুদ্ধে মামলা চালানোর বিষয়েও ট্রাম্প সমালোচনা করেছেন। লুলার এই পদক্ষেপকে ট্রাম্প “উইচ হান্ট” বলে অভিহিত করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী পদ্ধতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন।

ট্রাম্পের মতে, বিমান, সেমিকন্ডাক্টর, ইভি ব্যাটারি ও সামরিক সরঞ্জামে ব্যবহৃত তামার ঘাটতি দূর করতে আমেরিকাকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, চিলি থেকে দ্রুত তামা আমদানি করা হবে এবং আমেরিকার অভ্যন্তরীণ তামা শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা পাল্টা হুমকি দিয়েছেন, আমেরিকা অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করলে ব্রাজিলও সমপরিমাণ শুল্ক বসাবে। ফলে দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক যুদ্ধের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ট্রাম্পের নেতৃত্বে এই নীতিগত অবস্থান আগামী দিনে বৈশ্বিক অর্থনীতির উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমেরিকার এই একতরফা সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এটি একটি কঠিন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়াবে।

Nenhum comentário encontrado