সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগুন

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তৃতীয় তলায় হঠাৎ আগুন! সকাল ১১টার আগে শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত—দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও একাধিক কাগজপত্র পুড়ে ছাই। আতঙ্কে কেঁপে উঠে পুরো ভবন।..

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগুন: দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনলেও আতঙ্কে আদালতপাড়া

আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালটা অন্য যেকোনো দিনের মতো স্বাভাবিক মনে হলেও হঠাৎ ঘটে গেল এক বিপত্তি। দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তৃতীয় তলায় আকস্মিকভাবে আগুন লেগে যায়, যার ফলে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

সকাল পৌনে ১১টার দিকে ভবনের তৃতীয় তলার ছাদের স্টোররুম থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের সূচনা। বিষয়টি বুঝতে পেরে সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।

তৎপরতা ও সঠিক সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন তাঁরা। এরপর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুরো ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং আগ্নিকাণ্ড পুরোপুরি নির্বাপণ নিশ্চিত করেন।

সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,

 

স্টোররুমে রাখা কিছু কাগজপত্র, স্টেশনারি এবং প্লাস্টিক সামগ্রী পুড়ে গেছে। তবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো—ওই স্টোররুমে কোনো মামলা সংশ্লিষ্ট দাপ্তরিক নথিপত্র সংরক্ষিত ছিল না।”

 

স্টোররুমটিতে শুধুমাত্র অফিস ব্যবহারের জন্য কিছু সাধারণ সামগ্রী রাখা ছিল, যেমন—ফাইল কভার, কাগজ, কলম, প্লাস্টিক ফোল্ডার ইত্যাদি।”

এই ঘটনায় কোনো মানবিক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও, সকালবেলার ব্যস্ত আদালতপাড়ায় মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তা কর্মীরা আশেপাশের অংশে চলমান কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেন, যাতে কোনো রকম প্রাণহানি না ঘটে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও রয়ে যায় প্রশ্ন

যদিও ঘটনাটি বড় কোনো বিপর্যয়ে রূপ নেয়নি, তবুও বিষয়টি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন—সুপ্রিম কোর্টের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল স্থাপনায় কীভাবে এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে?
এ ধরনের স্টোররুমে আগুন প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা আধুনিক ও কার্যকর, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকে।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্ত শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। এতে জানা যাবে শর্ট সার্কিটের প্রকৃত কারণ এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

আদালতপাড়ায় স্বস্তি ফিরলেও নজরদারি জরুরি

ঘটনার পরপরই আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকে। তবে আদালতপাড়ায় যাঁরা প্রতিদিন কাজ করেন—আইনজীবী, সাংবাদিক, মামলার পক্ষগণ—তাঁদের মাঝে অস্থিরতা লক্ষ করা যায়। অনেকে মনে করেন, সুপ্রিম কোর্টের মতো স্থানে এমন ঘটনা নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়।

সরকারি ও আদালত প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন অগ্নিকাণ্ড পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর নজরদারি ও নিয়মিত ইলেকট্রিক সিস্টেম পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে।

 


এই অগ্নিকাণ্ড হয়তো বড় ক্ষতির কারণ হয়নি, তবে একটি সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। আদালতের মতো সংবেদনশীল স্থানে নিরাপত্তা ও অগ্নি-প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী না হলে ভবিষ্যতে এর চেয়েও ভয়াবহ কিছু ঘটে যেতে পারে।

没有找到评论