close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

স্টারলিংকের নতুন যুগ: ফাইবার অ্যাট হোমের সহযোগিতায় বাংলাদেশে দ্রুতগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে স্টারলিংকের দ্রুতগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। তবে, এ সেবা বাস্তবায়ন করতে স্টারলিংককে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, বিশেষ করে গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশের প্রয..

স্টারলিংক সেবা: বাংলাদেশের ইন্টারনেটের ভবিষ্যত পরিবর্তন হতে যাচ্ছে

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংক, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে একটি আলোচিত নাম। স্টারলিংক বাংলাদেশে তাদের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর আগেই ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বদলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাংলাদেশের বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) থেকে নিবন্ধন পাওয়ার পর, এই সেবা শুরু হওয়ার পথে।

তবে, সেবা চালু করার জন্য স্টারলিংককে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) লাইসেন্স এবং কাঙ্ক্ষিত অবকাঠামো স্থাপন করতে হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন। গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের জন্য বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আলোচনা চলছে, তবে এই আলোচনা অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে এগিয়ে চলছে। বিশেষত, বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান 'ফাইবার অ্যাট হোম' স্টারলিংকের সহযোগী হতে পারে এমন একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

ফাইবার অ্যাট হোমের সাথে সহযোগিতা

ফাইবার অ্যাট হোমের চেয়ারম্যান মঈনুল হক সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তারা স্টারলিংককে কিছু অবকাঠামো ব্যবহার করতে সহায়তা করবে। স্টারলিংক তাদের ট্রান্সমিশন, ব্যান্ডউইথ, কানেক্টিভিটি এবং ডাটা সেন্টারের ব্যবহারে ফাইবার অ্যাট হোমের সহায়তা নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজীপুর হাইটেক পার্কে ফাইবার অ্যাট হোমের ডাটা সেন্টারও এই সহযোগিতার অংশ হতে পারে।

স্টারলিংক-এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম

এখন পর্যন্ত জানা গেছে, স্টারলিংক জুন অথবা জুলাই মাসে তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে পারে। শুরুতে ব্যান্ডউইথ ইন্টারনেট সেবা চালু হবে, তবে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা আপাতত পাওয়া যাবে না। স্টারলিংকের প্রথম লক্ষ্য হবে বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো, যারা উচ্চগতিসম্পন্ন, নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা চাইবে।

গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন

স্টারলিংক তাদের সেবা চালু করার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। প্রথম পর্যায়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর, কক্সবাজার, যশোর এবং চট্টগ্রামে স্টেশন স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

আইএসপির প্রতিযোগিতা

স্টারলিংক সেবা চালু হলে স্থানীয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (আইএসপি) জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে। আইএসপিএবি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ)-এর সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, "নতুন প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে, তবে স্টারলিংক আমাদের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হবে না, কারণ তাদের মতো কম মূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।"

ফাইবার অ্যাট হোমের অবদান

ফাইবার অ্যাট হোম ২০০৯ সালে এনটিটিএন (ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) লাইসেন্স পেয়েছে এবং সারা দেশে ৬০ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার কেবল স্থাপন করেছে। তাদের ডাটা সেন্টার বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফাইবার অ্যাট হোম এই অবকাঠামো এবং সেবা দিয়ে স্টারলিংককে বাংলাদেশের ইন্টারনেটের অভ্যন্তরীণ ট্রান্সমিশন এবং কানেক্টিভিটি সুবিধা দেবে।

স্টারলিংকের জন্য নতুন যুগের সূচনা

স্টারলিংক যখন তাদের সেবা বাণিজ্যিকভাবে চালু করবে, তখন এটি বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গতি এবং সেবার ক্ষেত্রে একটি বিপ্লব ঘটাতে পারে। বিশেষত, গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষের জন্য এটি এক নতুন যুগের শুরু হতে পারে। তবে, দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ আসবে, তাই সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং সেফগার্ডও জরুরি।

Nema komentara