দেশজুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও অস্থিরতায় ভীত দেশের মানুষ। জাতীয় পার্টি বলছে, এই সরকার সবখানে ব্যর্থ—এখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন জরুরি।
দেশজুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও আইনশৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতিতে আতঙ্কিত পুরো জাতি—এই মন্তব্য করে সরকারকে সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ বলে আখ্যা দিয়েছে জাতীয় পার্টি (রওশন)। দলটির মহাসচিব কাজী মো. মামুনূর রশিদ এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভেঙে দিয়ে অবিলম্বে একটি গ্রহণযোগ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক।
রোববার (১৩ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। দেশের সাম্প্রতিক অপরাধপ্রবণ পরিস্থিতি ও আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি নিয়ে উদ্বেগ জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয় পার্টি (রওশন)।
সংবাদ সম্মেলনে মামুনূর রশিদ বলেন, “১০ জুলাই পুরান ঢাকায় ঘটে যাওয়া নারকীয় হত্যাকাণ্ড সহ সাম্প্রতিক হত্যা, ধর্ষণ, দখলবাজি, সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্যে মানুষ আজ আতঙ্কিত ও অসহায়। দেশের ১৮ কোটি জনগণের জীবন আজ নিরাপদ নয়।”
তিনি আরও বলেন, “এই সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তাই জাতীয় পার্টি মনে করে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার শুধু সিদ্ধান্তহীন নয়, বরং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে অচল করে তুলেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে দেশ গভীর অন্ধকারে পতিত হবে।”
মামুনূর রশিদ সতর্ক করে বলেন, “দেশি-বিদেশি অপশক্তি বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। অর্থনীতির চাকাকে অচল করে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। এমনকি সশস্ত্র বাহিনীর সম্মান ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অর্জিত সুনাম বিনষ্টের ষড়যন্ত্রও চলছে।”
জাতীয় পার্টির মহাসচিব অর্থনৈতিক বিষয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ৩৫ শতাংশ ট্যারিফ বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য অশনি সংকেত। গত এগারো মাসে কোনো বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি, সার্বিক অর্থনীতিও মারাত্মক নাজুক অবস্থায় আছে।”
তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এই সরকারের সময় আর নেই। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য এখনই একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”
জাতীয় পার্টির এই নেতা সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের উদ্দেশ্যে বলেন, “দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনীকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। জনগণ আর কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দেখতে চায় না। সেনাপ্রধানকে জাতির স্বার্থে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে—এখনই সময়।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুর রহমান শফিক, খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, সৈয়দ ওয়াহেদুল ইসলাম তরুণ এবং হাফসা সুলতানা প্রমুখ।