সৌদি বাদশার ব্যতিক্রমী ঘোষণা: বিশ্বের ১০০ দেশের ১৩০০ মুসল্লি এবার হজ করবেন রাজকীয় অতিথি হিসেবে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নির্বাচিত ১০০ দেশের ১৩০০ মুসল্লিকে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ব্যক্তিগত উদ্যোগে হজ পালনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের শহিদ, আহত ও বন্দি পরিবারের সদস্..

বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য সৌদি বাদশার বিরল সৌজন্য

সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আবারও প্রমাণ করলেন—তিনি শুধু সৌদি আরবের নন, গোটা মুসলিম বিশ্বের অভিভাবক। বিশ্বের ১০০ দেশের ১৩০০ জন মুসল্লিকে হজ পালনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন যা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এই উদ্যোগটি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন মুসলিম উম্মাহ একের পর এক সংকটে জর্জরিত। রাজনৈতিক বিভাজন, যুদ্ধ ও নিপীড়নের ভেতর দিয়ে যারা ধৈর্য ধরেছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং ইসলামের মহাসংগ্রামে আত্মত্যাগ করা পরিবারগুলোর প্রতি সৌদি বাদশাহর এই শ্রদ্ধাঞ্জলি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।


ফিলিস্তিনিদের প্রতি সৌদি আরবের অকুণ্ঠ ভালোবাসা

বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের জন্য এই ঘোষণাটি যেন আলাদা মর্যাদা বহন করে। সৌদি ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এই অতিথি হজ প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে ফিলিস্তিনের সেই পরিবারগুলিকে, যারা শহিদ হয়েছেন, বন্দি অবস্থায় রয়েছেন বা আহত হয়েছেন।

বাদশাহ সালমান তাঁর ব্যক্তিগত খরচে এই ১,০০০ জন ফিলিস্তিনি মুসল্লিকে হজ করানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, ফিলিস্তিনিদের ওপর ঘটে যাওয়া অন্যায়ের প্রতি সৌদি আরব কেবল মৌখিক সমর্থনই নয়, কার্যকর ও হৃদয়স্পর্শী উদ্যোগ গ্রহণেও সক্ষম।


মানবিকতার অনন্য উদাহরণ হিসেবে হজ গেস্ট প্রোগ্রাম

সৌদি আরবের ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ আলে শায়েখ বলেন, “প্রতি বছরই সৌদি সরকার ফিলিস্তিনিদের হজ পালনের সুযোগ দেয়। এবার তার পরিসর আরও বিস্তৃত হয়েছে। এটি শুধু হজ নয়, এটি হলো ফিলিস্তিনিদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা।”

এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ফিলিস্তিনের ধর্ম ও আওকাফ বিষয়ক মন্ত্রী হাতিম আল-বাকারি। তিনি বলেন, “এই আমন্ত্রণ শুধু হজ নয়, এটি ফিলিস্তিনিদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। সৌদি আরব আমাদের পাশে আছে, এটা আমাদের সংগ্রামে শক্তি যোগাবে।”


মুসলিম ঐক্যের বার্তা পৌঁছাল বিশ্বজুড়ে

সৌদি বাদশাহর এই উদ্যোগ একটি সুস্পষ্ট বার্তা বহন করে: মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য, সহমর্মিতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধই ইসলামি সমাজের ভিত্তি। ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সৌদি আরব এভাবেই নেতৃত্ব দিচ্ছে বিশ্ব মুসলিম সমাজে মানবিক ও আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের।


উপসংহার

বাদশাহ সালমানের এই ঐতিহাসিক উদ্যোগ শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি হলো মুসলিম বিশ্বে সৌদি আরবের মর্যাদা ও দায়িত্বশীলতার প্রতিফলন। দুঃখ-কষ্টের মাঝে থাকা মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের আত্মত্যাগকে মূল্যায়ন করা এবং ধর্মীয়ভাবে পুরস্কৃত করার মাধ্যমে তিনি দেখিয়ে দিলেন—ইসলাম শুধু নামাজ, রোজা নয়; এটি হৃদয়ের ধর্ম, মানবতার ধর্ম।


উৎস: সৌদি গেজেট

לא נמצאו הערות