ঢাকা, ১১ জুলাই: ঢাকার রাত যেন এক অন্যরকম আবেশে ভরপুর। সোহাগ নামক এক ব্যবসায়ীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উত্তাল হয়েছে শহরের রাজপথ। বিগত কয়েকদিন ধরে দিন-রাতের পার্থক্য ভুলে, বিচারের দাবিতে একত্রিত হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠন।
মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী সোহাগকে বিএনপি সংশ্লিষ্ট কিছু নেতাকর্মী নির্মমভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিটফোর্ড, সদরঘাট, বংশাল এবং পল্টন এলাকা সহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। "চাঁদাবাজ মুক্ত বাংলাদেশ চাই", "সোহাগ হত্যার বিচার চাই"—এমন স্লোগানে মুখরিত হয়েছে পুরো শহর।
বিক্ষোভকারীরা হাতে মোমবাতি, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এক শিক্ষার্থী বলেন, "আমরা এমন বাংলাদেশ চাই না, যেখানে সাধারণ মানুষকে চাঁদার জন্য প্রাণ দিতে হয়। সোহাগ ভাইয়ের বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বো না।"
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, পরিস্থিতি এখনও পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ রয়েছে। তবে পুলিশের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
নিহত ব্যবসায়ী সোহাগকে চাঁদাবাজি নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপি সংশ্লিষ্ট কিছু দুর্বৃত্ত নেতাকর্মী পিটিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। নাগরিক সমাজের দাবি, শুধু গ্রেপ্তার নয়—এই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ ও ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়ে ভাইরাল হচ্ছে পোস্ট, ভিডিও ও প্রতিবাদ বার্তা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঁদাবাজি ও সহিংসতার যে কালো ছায়া পড়েছে তা দূর না হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সংকুচিত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের কার্যকর ভূমিকা এবং দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু করা অত্যন্ত জরুরি।
সোহাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাকার বাইরেও আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছে। বিভিন্ন জেলায় সাধারণ মানুষেরা মিছিল-মিটিং আয়োজন করছে। এই আন্দোলন কতদূর গড়াবে এবং কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে উৎকণ্ঠা রয়েছে।