পাবনায় ‘জুলাই পদযাত্রা’র পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যারা রাজনৈতিক সংস্কার বাধাগ্রস্ত করছে, তারাই আসলে আগামী জাতীয় নির্বাচন পেছাতে চায়। তিনি মুজিববাদ, মিডিয়া দখল ও বসুন্ধরা-এস আলম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরব হন।
যারা সংস্কার আটকে রাখছে, তারাই নির্বাচন পেছাতে চায়”—এমন অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
৭ জুলাই, সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে পাবনার আব্দুল হামিদ সড়কে ‘জুলাই পদযাত্রা’র পথসভায় এ বক্তব্য দেন তিনি। বক্তব্যে তিনি সরাসরি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
একটি পক্ষ বারবার সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করছে। তারাই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। অথচ আমরা বলছি, নির্বাচন চাই—কিন্তু তা হতে হবে সুশাসনের ভিত্তিতে, সংস্কার সাপেক্ষে। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানেই অবৈধ ক্ষমতা স্থায়ী করার চক্রান্ত।
তিনি বলেন, “একটি বিশেষ দল এখন নিজেদের ‘মুজিববাদের পাহারাদার’ হিসেবে দাবি করছে, যারা আসলে অভ্যুত্থান বিরোধিতার নামে গণতন্ত্রকেই আক্রমণ করছে। তারা প্রকৃতপক্ষে মুজিববাদের ঠিকাদার হয়ে উঠেছে। অভ্যুত্থানের ভিত্তি নেই—এই বক্তব্যই তাদের গোপন এজেন্ডা লুকানোর চেষ্টা।”
হাসনাত আরও বলেন, “বিএনপি বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে অথচ দেশের ভেতরে তারা সংস্কার বা স্পষ্ট কোনো অবস্থান নেয়নি। দেশের আকাশে রাজনৈতিক অস্থিরতা জমাট বাঁধছে, অথচ কেউ বাস্তব সমাধান দিতে পারছে না।
৩ আগস্ট শহীদ মিনার থেকে ‘দ্বিতীয় বাংলাদেশের ঘোষণাপত্র’ পাঠ করা হবে। এটি শুধু রাজনৈতিক দল নয়, দেশের মানুষকে বাস্তব মুক্তির পথ দেখাবে।
এসময় তিনি গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন। “গণমাধ্যমে অনেক ভাই রয়েছেন, যারা সত্যি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ তুলে ধরেন। কিন্তু কিছু দলদাস সাংবাদিক সুনাম ক্ষুণ্ণ করছেন, বিশেষত বসুন্ধরা ও এস আলম সিন্ডিকেটের হয়ে কাজ করে তারা পুরো মিডিয়া জগৎকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমাদের রাজনীতি লুটেরা, ধর্ষক ও মাফিয়াদের হাতে জিম্মি হয়ে গেছে। বসুন্ধরা, এস আলমদের কাছে রাজনীতিকে বর্গা দেওয়া হয়েছে, যার ফলে দেশের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আমাদের রাজনীতি রক্ষা করতে হলে এই সিন্ডিকেট ভাঙতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, “মিডিয়াকে মাফিয়ামুক্ত করতেই হবে। আমরা চাই গণমাধ্যম হোক স্বাধীন, সত্যভিত্তিক ও নিরপেক্ষ।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন—জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও যুগ্ম-সদস্য সচিব মাহিন সরকারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।