close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

সংগীতশিল্পী কনার বিচ্ছেদ, পক্ষ নিয়ে সালমার বিশেষ বার্তা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সংগীতশিল্পী কনার হঠাৎ বিচ্ছেদের ঘোষণায় তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। শিল্পীমহলে শুরু গুঞ্জন ও পরকীয়ার ইঙ্গিত। এমন এক উত্তাল সময়ে শিল্পীর পাশে দাঁড়িয়ে শক্ত বার্তা দিলেন সংগীতশিল্পী সালমা। কী বললেন তিনি? কী ইঙ..

বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে হঠাৎই ছড়িয়ে পড়ল এক বিষাদের সুর। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা হুট করে নিজের ছয় বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন—এই খবর সামনে আসতেই ভক্ত, অনুসারী এবং সহকর্মীদের মাঝে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কনা নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে বিচ্ছেদের তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি লেখেন, “আমি আপনাদের ভালোবাসার কনা। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে—সবই আল্লাহর ইচ্ছা। ঠিক তেমনি যেকোনো বিচ্ছেদও হয় তারই ইশারায়।” এই এক লাইনের পেছনে লুকিয়ে ছিল সম্পর্কের দীর্ঘ এক গল্পের ইতি।

কনার এই ঘোষণার পর থেকেই মিডিয়ায় শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। কনার স্বামী মো. ইফতেখার গহিন অবশ্য শুরুতে বিচ্ছেদের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তার ফেসবুক পোস্টে লেখা ছিল, "বিচ্ছেদ হয়নি", তবে সেই পোস্ট কিছু সময় পর সরিয়ে ফেলা হয়, যা নতুন করে সংশয়ের জন্ম দেয়।

এই বিভ্রান্তিমূলক পরিস্থিতিতে কেউ কনাকে দোষারোপ করে, কেউবা তার পক্ষে মুখ খুলতে শুরু করেন। অনেকে আবার কনার বিরুদ্ধে টিপ্পনি কেটে সোশ্যাল মিডিয়ায় কটূক্তি ছড়াতে থাকেন। সেই সময়েই কনাকে ঘিরে এক নতুন গুঞ্জনের জন্ম হয়—পরকীয়া। যদিও এ নিয়ে সরাসরি কোনো পক্ষ মুখ খোলেনি।

সংগীতশিল্পী সালমা আক্তার ঠিক তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন, যা দ্রুতই ভাইরাল হয়ে পড়ে। পোস্টে তিনি লেখেন, “কঠিন সময় শিল্পীর পাশে থাকাটা জরুরি। আমাদের ট্যাগ কিন্তু আমরা শিল্পী।”

এই স্ট্যাটাস দেখে অনেকেই অনুমান করেন—সালমা কনার পক্ষেই কথা বলছেন।
সালমা আরও লেখেন, “আমাদের কর্তব্য সবাই একসাথে মিলে থাকাটা। দুই দিনের দুনিয়া কে কখন আছি আবার নেই। যার যার কষ্ট তার তার।”

এখানেই শেষ নয়। সালমা একটি ভিডিও বার্তা-তেও মুখ খোলেন। সেখানে কণ্ঠে আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, “এসব বিষয়ে আমি চুপ থাকতেই পছন্দ করি। আমার খারাপ লাগে, একটা অঙ্গনের মানুষ যেমন ডাক্তার, উকিল- তাদের কোনো সমস্যা হলে একজোট হয়ে কাজ করে। কিন্তু আমাদের শিল্পীগোষ্ঠীদের বেলাতে দেখি, যখন কেউ বিপদে পড়ে, তখন বাকি শিল্পীরা চুপ থাকে, একটু মজা দেখে।”

তার এই মন্তব্য শুধু শিল্পীমহল নয়, ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যেও আলোড়ন তোলে।

এই ঘটনার পর সংগীতশিল্পী ফারহানা ন্যান্সির একটি স্ট্যাটাস ঘিরে সৃষ্টি হয় নতুন বিতর্ক। তিনি লেখেন, “জন্ম মৃত্যু বিয়ে বিচ্ছেদ; এর সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হয়- বাণীতে শেয়াল রানি।

নেটিজেনদের একাংশের মতে, এটি সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে কনাকেই উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে। যদিও ন্যান্সি নিজে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি, তবে তার স্ট্যাটাসের সময়কাল এবং ভাষা দেখে অনেকেই সেই দিকেই ইঙ্গিত করেন।

এখন প্রশ্ন উঠেছে—বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ভেতর কি পারস্পরিক সহমর্মিতা হারিয়ে যাচ্ছে? একজন শিল্পীর দুঃখ, তার ব্যথা কি এখনো আরেক শিল্পীর হৃদয়ে প্রতিধ্বনি তোলে?

সালমা যেমন কনার পাশে দাঁড়িয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন, ঠিক তেমনি ন্যান্সির স্ট্যাটাস নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কনার বিচ্ছেদে কার দোষ, কার না—তা হয়তো সময়ই বলবে। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—এই ঘটনা বাংলাদেশি সংগীতাঙ্গনে নতুন করে কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

সংগীতশিল্পী কনার ব্যক্তিগত জীবনের এই ছন্দপতন তার সংগীতজীবনে কতটা প্রভাব ফেলবে তা সময়ই বলবে। তবে এই ঘটনাটি শিল্পীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, সহানুভূতি এবং নৈতিক দায়িত্ববোধ নিয়ে আমাদের সবাইকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। সালমার মতো কেউ কেউ হয়তো পাশে দাঁড়ান, কিন্তু বাকিরা? আমরা কি কেবল দেখেই যাই?

No se encontraron comentarios