সাংবিধানিক প্রক্রিয়া লঙ্ঘন এবং দেশের গণতন্ত্রের প্রশ্নে তীব্র প্রশ্ন তুললেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেছেন, মাত্র ৩৫-৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে কোনো দল সরকার গঠন করে সংবিধানকে নিজেদের খেলার মাঠ বানাতে পারে না; এমন পরিস্থিতি চলতে পারে না।
সোমবার বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নোয়াখালী জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে তিনি এই প্রশ্ন তোলেন। ফয়জুল করীম বলেন, ৪০ শতাংশ ভোটের সরকার হলে বাকি ৬০ শতাংশ জনগণের ভোটের মূল্য কোথায়? এটি দেশের জনগণের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হলেও বিগত সরকারের আমলে দেশের মানুষ স্বাধীন দেশে ছিল পরাধীন। ২৪ সালের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর জনগণের আশা ছিল দেশ সঠিক পথে এগোবে, কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না।
ঐক্যমত্য কমিশন ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন দাবি
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ইসলামী আন্দোলন পাঁচ দফা দাবির মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করেছে। ৩১টি দল ঐক্যমত্য কমিশনে অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ২৫টি দল পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দাবি করেছে। তিনি রাষ্ট্রের সংস্কার নিশ্চিত করতে ঐক্যমত হওয়া ৮৪টি বিষয়ে তালবাহানা না করে দ্রুত জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবি জানান।
দুর্নীতি, ঋণ ও অপশাসনের সমালোচনা
মুফতি ফয়জুল করীম হুঁশিয়ারি দেন যে, আগামীতে পরীক্ষিত দুর্নীতিবাজ, খুনি ও জুলুমবাজদের ক্ষমতায় নেওয়া যাবে না। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে দেশের মালিক আর জনগণকে তাদের দাস মনে করেছিল। তাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেই খুন, গুম করা হতো।
বিগত সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, "দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে আছে জানিয়ে জনগণকে মিথ্যে গল্প শুনিয়েছে। অথচ দেশের কোনো ব্যাংকে টাকা নেই। সব টাকা তারা বিদেশে পাচার করে নিয়েছে। বৈদেশিক ঋণের চাপে দেশের অগ্রযাত্রা থমকে যাচ্ছে!"
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নোয়াখালী জেলা উত্তর এর সভাপতি মাও. নজীর আহমদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ উদ্বোধন করেন নোয়াখালী জেলা দক্ষিণ এর সভাপতি মাও. ইউসুফ ভূঁইয়া। সমাবেশে জেলা ও থানা পর্যায়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।