close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সম্প্রতি দেশের অপরাধজগতে ‘শয়তানের নিশ্বাস’ বা ‘ডেভিলস ব্রেথ’ একটি আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মাদকদ্রব্যটি আসলে ‘স্কোপোলামিন’ নামক একটি সিনথেটিক ড্রাগ, যা ধুতরা ফুল থেকে তৈরি হয়। অপরাধীরা এই ড্রাগ ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে বশ করে তাদের মূল্যবান জিনিসপত্
মাদকদ্রব্যটি আসলে ‘স্কোপোলামিন’ নামক একটি সিনথেটিক ড্রাগ, যা ধুতরা ফুল থেকে তৈরি হয়। অপরাধীরা এই ড্রাগ ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে বশ করে তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিচ্ছে। কীভাবে কাজ করে এই ‘শয়তানের নিশ্বাস’? স্কোপোলামিন একধরনের সিনথেটিক ড্রাগ। এর মূল উপাদান আসে ধুতরা ফুল থেকে। ধুতরা ফুলের সঙ্গে আরও কিছু উপাদান যোগ করে তৈরি করা হয় স্কোপোলামিন। এটি তরল ও পাউডার—দুই রকমেরই হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্কোপোলামিনের অনেক ব্যবহার আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি ‘ট্রুথ সেরাম’ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। প্রয়োগ করা হতো ইনজেকশনের মাধ্যমে। যার শরীরে প্রয়োগ করা হতো, তার মস্তিষ্কের যে নিয়ন্ত্রণক্ষমতা, সেটি চলে যেত। ফলে অন্যের কথামতো গোপন তথ্য দিয়ে দিত। শ্বাসের মাধ্যমে পাউডার নিলে শরীরে এর প্রভাব পড়ে তুলনামূলক দ্রুত। অপরাধীরা এ ক্ষেত্রে নিজেরা মাস্ক পরে থাকে। আর স্কোপোলামিন মাখানো ভিজিটিং কার্ড, কাগজ, মুঠোফোন মানুষের নাকের কাছাকাছি নিয়ে যায়, ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি হিপনোটাইজ বা সম্মোহিত হয়ে যান। এরপর সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র নিজ থেকেই দিয়ে দেন। আক্রান্ত ব্যক্তি এক থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসেন। তবে ওভারডোজ বা অতিরিক্ত মাত্রায় প্রয়োগ করা হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। স্কোপোলামিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ঝাপসা দেখা, মাথাব্যথা, অস্থির লাগতে থাকার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তবে অতিরিক্ত মাত্রার ফলে হার্টবিট বা হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, চোখের মণি বড় হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি ও অজ্ঞান হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। হৃৎস্পন্দন অনেক বেড়ে গিয়ে অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে। এই ভয়ঙ্কর মাদক থেকে নিজেকে বাঁচাবেন কীভাবে? রাস্তায় বা যানবাহনে চলাচলের সময় অপরিচিত কারও কাছ থেকে কোনো খাবার বা পানীয় গ্রহণ করবেন না। অপরিচিত কেউ যদি ভিজিটিং কার্ড বা কাগজ আপনার মুখের সামনে ধরার চেষ্টা করে, তাহলে সাবধান থাকুন। রাস্তায় চলাচলের সময় মাস্ক ব্যবহার করুন। এতে শ্বাসের মাধ্যমে স্কোপোলামিন শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না। কোনো সমস্যা হলে নিকটস্থ থানা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্য নিন। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে স্কোপোলামিনের প্রভাব বেশি মনে হলে, তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। এই বিষয়ে মেডিসিন স্পেশালিস্ট ডা. আফলাতুন আকতার জাহান বলেন, "স্কোপোলামিন একটি ভয়ঙ্কর মাদক। এর থেকে বাঁচতে হলে আমাদের নিজেদেরকেই সচেতন হতে হবে। অপরিচিত লোকদের কাছ থেকে কিছু খাওয়া বা পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।" স্কোপোলামিন নামক এই ‘শয়তানের নিশ্বাস’ থেকে বাঁচতে হলে আমাদের সকলেরই সতর্ক থাকতে হবে।
Hiçbir yorum bulunamadı


News Card Generator