সড়কে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, ঢাকা-উত্তরবঙ্গ যোগাযোগ বন্ধ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Demanding the construction of a permanent campus, Rabindra University students blocked the Sirajganj highway, cutting road links between Dhaka and northern districts, causing severe travel disruptions..

স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সিরাজগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে দুইমুখী যান চলাচল বন্ধ হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে রোববার (১০ আগস্ট) সকাল থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছেন। সকাল ১১টার দিকে ধোপাকান্দি এলাকায় শুরু হওয়া এ অবরোধের কারণে ঢাকা-পাবনা, ঢাকা-রাজশাহী এবং ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের উভয়মুখী যান চলাচল থমকে যায়। এতে দীর্ঘ যানজটের পাশাপাশি হাজারো যাত্রী ও পরিবহন চালক মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েন।

শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচি শুরু হয় সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুর রউফ বলেন, "আমরা বিষয়টি আগে থেকেই জানতাম। অবরোধ শুরুর পর শহর দিয়ে বিকল্প রুটে যানবাহন পার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।"

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রায় নয় বছর আগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনও এর কার্যক্রম চলছে ভাড়া করা ভবনে। বর্তমানে পাঁচটি বিভাগে—বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সঙ্গীত ও ব্যবস্থাপনা—১২০০ শিক্ষার্থী, ৩৪ শিক্ষক, ৫৪ কর্মকর্তা এবং ১০৭ কর্মচারী নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এরই মধ্যে ১০০ একর জমিতে ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। ২০২৫ সালের জন্য প্রস্তাবিত এ উন্নয়ন প্রকল্পটি বর্তমানে একনেকের নীতিগত অনুমোদনের পর্যায়ে রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, দ্রুত এই প্রস্তাব অনুমোদন করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

এর আগে শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছিলেন। গত ২৬ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন এবং অবস্থান কর্মসূচি চালিয়েছেন তারা। সম্প্রতি তারা সরকারের কাছে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো সমাধান না আসায় আজ তারা সড়ক অবরোধে নামেন।

শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি, যদি দ্রুত স্থায়ী ক্যাম্পাসের অনুমোদন না দেওয়া হয় এবং নির্মাণ কার্যক্রম শুরু না হয়, তবে তাদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে এবং ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি অবরোধ বা অন্যান্য কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে।

এই অবরোধের কারণে উত্তরবঙ্গমুখী ও ঢাকামুখী শত শত বাস, ট্রাক, পণ্যবাহী যানবাহন থেমে যায়। যাত্রীদের অনেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকেন। বিকল্প রুট দিয়ে সীমিত সংখ্যক যান চলাচল করলেও তাতে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব হয়নি। পরিবহন চালকেরা জানান, দীর্ঘ সময় সড়কে আটকে থাকার কারণে পণ্য নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিটি যৌক্তিক হলেও এভাবে মহাসড়ক অবরোধের ফলে সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তারা মনে করেন, সরকারের উচিত দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে শিক্ষা কার্যক্রম ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন একসঙ্গে সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে।

No se encontraron comentarios