close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের বাহিনী প্রস্তুত’ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সীমান্তে ভারতীয় পুশইন বাড়লেও নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি নেই—স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শক্ত বার্তা। একইসঙ্গে কারা ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন ও বন্দিদের জন্য আয়ের সুযোগসহ নতুন উদ্যোগের ঘোষণা দিলেন তিনি।..

সীমান্তে যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সম্পূর্ণ প্রস্তুত—এমনই সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, “সীমান্তে পুশইনের সংখ্যা বাড়লেও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো রকম ঘাটতি নেই। আমাদের সীমান্তরক্ষীরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত। ভারত সরকারের প্রতি আমরা কূটনৈতিকভাবে বার্তা পৌঁছেছি—যাতে পুশইনের পরিবর্তে যথাযথ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হয়।”

আজ মঙ্গলবার রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১৪তম ডেপুটি জেলার এবং ৬২তম ব্যাচের কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আশ্বস্ত করেন।

আধুনিক কারা ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গির বদল:
কেবল সীমান্ত নয়, দেশের অভ্যন্তরে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক মানের একটি আধুনিক কারা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। বন্দিদের শুধু আটক নয়, তাদের উন্নয়ন ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যেই জেল ব্যবস্থায় আনা হচ্ছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।”

তিনি আরও জানান, বন্দিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি কারাগারে স্থাপন করা হচ্ছে মোবাইল জ্যামার, বডিস্ক্যানার, লাগেজ স্ক্যানার, সার্কিট ডিটেক্টর ও পৃথক ইন্টারনেট ব্যবস্থা। এগুলোর পাশাপাশি চলছে “বাংলাদেশ প্রিজন্স” কে “কারেকশনাল সার্ভিস বাংলাদেশ” নামে রূপান্তরের প্রক্রিয়া, যা শুধুমাত্র নাম পরিবর্তন নয়—বরং একটি দৃষ্টিভঙ্গির বিপ্লব।

কারাগার হবে আয় ও শিক্ষার কেন্দ্র:
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, “কারাগারে তৈরি করা হবে কারেকশনাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। যেখানে বন্দিরা কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ কর্মশক্তিতে পরিণত হবে এবং জেল থেকেই উপার্জনের সুযোগ পাবে। এ আয় দিয়ে তারা পরিবারকেও আর্থিক সহায়তা করতে পারবে। এটি দেশের কারা ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী মাইলফলক হয়ে থাকবে।”

কারারক্ষীদের জন্য সম্মাননা ও সুযোগ:
কারারক্ষীদের অবদানকে সম্মান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “সরকার খুব শিগগিরই ‘বাংলাদেশ জেল মেডেল’ চালু করবে। সাহসিকতা ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক প্রদান করা হবে। এছাড়াও, অবসরে যাওয়া কারা সদস্যদের জন্য আজীবন রেশন সুবিধা চালুর বিষয়েও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

নবীনদের জন্য বার্তা:
তিনি নবীন কারারক্ষীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “এই সময়ে নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের চেতনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তোমাদের দায়িত্ব হবে বৈষম্যহীন, স্বচ্ছ এবং মানবিক কারা প্রশাসন গড়ে তোলা। বন্দিদের শাস্তি নয়—তাদের সংশোধন, পুনর্বাসন ও আত্মমর্যাদার পথে ফিরিয়ে আনা হবে তোমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ।”

অনুষ্ঠানে কারা কর্মকর্তাদের উপস্থিতি:
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সৈয়দ মোতাহের হোসেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, বিজিবির রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে রউফ, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি ড. মোহাম্মদ শাহজাহান, আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান ও রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের সফলতা:
উল্লেখ্য, এবার ২৪তম ব্যাচে ১৮ জন নবীন ডেপুটি জেলার এবং ৬২তম ব্যাচে ৫০৮ জন নবীন কারারক্ষী সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।


এই রিপোর্টের মাধ্যমে পাঠক বুঝতে পারবেন, সীমান্ত সুরক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি কতটা সুসংগঠিত। পাশাপাশি, আধুনিক ও মানবিক কারা ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে সরকারের উদ্যোগ কতটা অগ্রগামী।

Không có bình luận nào được tìm thấy