মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের অপব্যবহার রোধে সিলেটে পুলিশের ৫০ তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিল বিকাশ। প্রতারণা শনাক্ত ও প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত কৌশল শেখানো হয় কর্মশালায়।
মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বাংলাদেশের লাখো মানুষের দৈনন্দিন লেনদেনের অন্যতম সহজ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই প্রযুক্তির অপব্যবহার করে সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের সঙ্গে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিকাশ এবং বাংলাদেশ পুলিশ যৌথভাবে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যার অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধারাবাহিকভাবে কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট রেঞ্জ পুলিশের উদ্যোগে এবং বিকাশের সহায়তায় সিলেট শহরের একটি স্থানীয় হোটেলে ‘মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের অপব্যবহার তদন্ত ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক একটি দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার ৫০ জন অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তা।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান। বিকাশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও বিকাশের উপদেষ্টা ড. মো. নজিবুর রহমান এনডিসি এবং বিকাশের ইভিপি ও হেড অব এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স মেজর (অব.) এ কে এম মনিরুল করিম।
কর্মশালায় আলোচিত হয়—কিভাবে ডিজিটাল প্রতারণার ঘটনা শনাক্ত করতে হয়, প্রযুক্তির মাধ্যমে কীভাবে ভুক্তভোগীর হারানো টাকা অনুসন্ধান করা যায় এবং কোন উপায়ে বিকাশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা সম্ভব। বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় প্রতারণার ধরন বিশ্লেষণ, ফোন নম্বর ট্র্যাকিং, লেনদেন পর্যবেক্ষণ এবং তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়ার ওপর।
প্রশিক্ষণে তুলে ধরা হয়, অনেক সময় প্রতারকরা সাধারণ মানুষের মোবাইল নম্বরে ফোন করে বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করার জন্য পুলিশ ও বিকাশের মধ্যে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তাদেরকে নতুন নতুন সফটওয়্যার ও মনিটরিং পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পুলিশের প্রায় ৪,৫০০ তদন্ত কর্মকর্তাকে এ ধরনের প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক তিন মাসে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রংপুর, লালমনিরহাট, সাতক্ষীরা, সুনামগঞ্জ এবং সিলেট জেলায় এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় প্রতারণার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এই উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা জানান, এই কর্মশালার মাধ্যমে তারা শুধু তদন্তে দক্ষতা অর্জনই করেননি, বরং সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কৌশলও শিখেছেন।