close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

শ্যামনগরে অচাষকৃত শাকের রান্না প্রতিযোগতিা ও খাদ্য উৎসব অনুষ্টিত..

Ranajit Barman avatar   
Ranajit Barman
উদ্ভিদ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণে ব্যক্তি ও সরকারী-বেসরকারী ভাবে চলছে নানা রকম উদ্যোগ, পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন কর্মকান্ড।..

শ্যামনগরে অচাষকৃত শাকের রান্না প্রতিযোগতিা ও খাদ্য উৎসব অনুষ্টিত

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধিঃ প্রকৃতির সাথে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক। আর এ প্রকৃতিতে আছে নানান প্রাণবৈচিত্র্য  যা অনাদর, অবহেলা এবং অযত্নে বেড়ে উঠেছে। এসকল প্রাণবৈচিত্র্য মানুষ ও প্রানীর খাদ্য এবং ঔষধী হিসাবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যবহার হয়।  জলবায়ু পরিবর্তন, লবনাক্ততা বৃদ্ধি, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অবাধ ব্যবহার এবং মনুষ্য বসতি স্থাপনের ফলে এসকল উদ্ভিদ বৈচিত্র্যে এবং তার প্রাপ্তিস্থান হারিয়ে যাচ্ছে। আর এসকল উদ্ভিদ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণে ব্যক্তি ও সরকারী-বেসরকারী ভাবে চলছে নানা রকম উদ্যোগ, পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন কর্মকান্ড।

প্রকৃতির এসকল উদ্ভিদবৈচিত্র্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিমজেলেখালী কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখণ কেন্দ্রে  সোমবার (২৪ নভেম্বর) দিনব্যাপি অনুষ্টিত হয়েছে উপকুলীয় গ্রামীন নারীদের মাধ্যমে অচাষকৃত শাকের রান্না প্রতিযোগিতা ও খাদ্য উৎসব। 

 দিনব্যাপি অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে সবুজ সংহতি ও স্থানীয় জনসংগঠনগুলো, সহযোগিতা করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।  অংশগ্রহন করেন কৃষক-কৃষানি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের সদস্যবৃন্দ।

 রান্না প্রতিযোগিতা ও খাদ্যউৎসবে পশ্চিমজেলেখালী গ্রামের স্থানীয় পাঁচটি  জনসংগঠনের ১৬ জন নারী ও পুরুষ প্রত্যেকেই একটি করে সবজি/খাবার রান্না করেন। ১৬ রকমের (কচুশাক, মাটিফোড়া, ডুমুর,  বুনো আমড়া, কলমিশাক, থানকুনি, শাপলা,  কলার মোচা, আদাবরুন,  কলার থোড়, কচুশাক, কাটানুটে, ঘুমশাক, তেলাকচু, আমরুল ও মিশ্রিত শাক) কুড়িয়ে পাওয়া শাক রান্না করেন। আর এ সকল শাক নারীরা তাদের বাড়ির আঙিনা, খাল-বিল, জলাশয় থেকে কুড়িয়ে আনেন।
গ্রামীণ এক উৎসব মুখর পরিবেশে কুড়িয়ে পাওয়া শাকের রান্না প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল রান্না ও স্বাদ গ্রহণ কর্মসূচি।  এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সবুজ সংহতির সভাপতি ডাঃ যোগেশ মন্ডল। এসময় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় ইউপি সদস্য দেবাশীষ গায়েন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাসুম বিল্লা, শিক্ষক হেমা রানী, কৃষানী অল্পনা রানী মিস্ত্রি, লতা রানী, শিক্ষার্থী অনান্যা ও  ধৃতিমা,  কৃষক ভুধর চন্দ্র মন্ডল,  বারসিক কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মন্ডল ও মারুফ হোসেন।
 বক্তব্যে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাসুম বিল্লা বলেন  আমরা বাজার থেকে যে শাকসবজি ক্রয় করি তা  সার বিষে ভরা যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।  তাই আমাদের সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকার জন্য  প্রকৃতির এ-সব উদ্ভিদ বৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে হবে।  

ইউপিসদস্য দেবাশিষ গায়েন বলেন,  যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ তেমনি লবণাক্ততার মাত্রা বেশি। তারপরও অসংখ্য প্রাণবৈচিত্র্য এখনো টিকে আছে আমাদের এলাকায়। এগুলো ছিলো গ্রামীণ মানুষের খাদ্য ভান্ডার ও পুষ্টির উৎস। 

অনুষ্ঠানের সভাপতি ডাঃ যোগেশ মন্ডল বলেন,  এ রান্না প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রকৃতির সকল উদ্ভিদবৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ব্যবহার ও বিকাশের জন্য নতুন প্রজন্মের সাথে গ্রামীণ নারীদের যেমন সেতু বন্ধন তৈরি হচ্ছে । 


 নির্ধারিত সময়ে রান্না শেষে চলে স্বাদ গ্রহণ কর্মসূচি। নারীরা তাদের রান্নার প্রধান উপকরণ কুড়িয়ে পাওয়া শাক/তরকারী সম্পর্কে উপস্থিত সকলকে অবহিত করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এরপর ৭ সদস্য বিচারকদয় স্বাদ- পুষ্টিগুন ও উপস্থাপনার উপর ভিত্তিতে বিজয়ী  নির্বচন করেন  যার বুনো আমড়া রান্না করে প্রথম স্থান অধিকার করেন যুব কৃষক প্রশান্ত নস্কর শাপলা ফুলের চপ,  কলমি শাক রান্না করে দ্বিতীয় হোন শিক্ষার্থী  জবা ও থানকুনি রান্না করে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন কৃষাণী ঝরনা রানী মন্ডল। নতুন প্রজন্মের মাঝে আগ্রহ মনোযোগ সৃষ্টিতে ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গ্রামীণ নারীর অবদানকে স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে বিজয়ী এবং অংশগ্রহণকারী সকল নারীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।

ছবি- শ্যামনগরে বুনো শাকের রান্না প্রতিযোগিতা

 

Hiçbir yorum bulunamadı


News Card Generator