শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির প্রতি বিএনপি নীতিগত সমর্থন জানিয়েছে। তবে এই আন্দোলনকে পুঁজি করে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালালে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দেশের চলমান শিক্ষক আন্দোলন এবং তাদের ন্যায্য দাবির পক্ষে নীতিগতভাবে সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তবে একইসঙ্গে এই আন্দোলনকে পুঁজি করে কোনো মহল যদি বিশৃঙ্খলা বা অগণতান্ত্রিক অপচেষ্টা চালানোর চেষ্টা করে, তবে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করার কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক প্রেস বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এই হুশিয়ারি দেন। বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত ওই প্রেস বিবৃতিতে বলা হয় দেশের একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত।
বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বরাত দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, শিক্ষকদের প্রতি দলটির অঙ্গীকার সুনির্দিষ্ট। এই অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে— মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিক্ষকদের চাকরির নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সামাজিক মর্যাদা এবং তাদের অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। শিক্ষকদের এই দাবিগুলো শুধুমাত্র দেশের সীমানায় নয়, বরং বিশ্বজুড়ে ৫০টিরও বেশি দেশে এই বিষয়ে জনমত পৌঁছেছে।
বিএনপি মহাসচিব বিশেষভাবে সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে, শিক্ষকদের চলমান এই 'মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আন্দোলন'-এর ছদ্মবেশে যদি কোনো মহল কোনো স্বৈরাচারী সহযোগী পরিকাঠামো নিঃস্বার্থভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করে, অথবা একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক উত্তরণের যেকোনো প্রয়াসকে প্রতিহত করার চেষ্টা চালায়, তবে বিএনপি সেই অপচেষ্টা প্রতিহত করার ক্ষেত্রে কোনো নমনীয়তা দেখাবে না
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে, বিএনপি শিক্ষকদের মতো একটি বৃহৎ পেশাজীবী গোষ্ঠীর ন্যায্য দাবির পক্ষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল, যা দলটির জনসমর্থন বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। অন্যদিকে, 'বিশৃঙ্খলার অপচেষ্টা প্রতিহত করার' হুঁশিয়ারি দিয়ে দলটি বুঝিয়ে দিয়েছে যে তারা এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অন্য কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের সুযোগ দেবে না।
বিশেষ করে, তারেক রহমানের বরাতে শিক্ষকদের চাকরি নিরাপত্তা এবং সামাজিক মর্যাদা নিয়ে দলের অঙ্গীকার ঘোষণা করা—শিক্ষাখাতের সমস্যা সমাধানে বিএনপির দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রতিফলন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল। এই বিবৃতি শিক্ষক আন্দোলনকে একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এনে ফেলেছে।
বিএনপি আশা করে, সরকার শিক্ষকদের এই ন্যায্য দাবিগুলোর প্রতি দ্রুত মনোযোগী হবে এবং একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাবে। একইসঙ্গে তারা এও প্রত্যাশা করে যে, এই আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো অগণতান্ত্রিক বা অসাংবিধানিক শক্তির উত্থানের সুযোগ তৈরি হবে না।
বিএনপি মহাসচিবের এই হুঁশিয়ারি প্রমাণ করে যে, শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন শুধু শিক্ষাক্ষেত্রের দাবি নয়, বরং এটি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।