close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো দেখেই মানুষ রাস্তায় নেমেছিলো, সমন্বয়কদের ডাকে নয়..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
In a heartfelt Facebook post, DU professor Kazi Haniyam Maria said, “It wasn’t coordination calls, but the sight of students being shot that brought people to the streets.” She described the July move..

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী হানিয়াম মারিয়া এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে বলেছেন, ‘সমন্বয়কের ডাকে নয়, শিক্ষার্থীদের ওপর গুলির দৃশ্যেই সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছিল।’ তিনি বলেন, এই আন্দোলন অনেকের জীবনে আজীবনের ট্রমা হয়ে থাকবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী হানিয়াম মারিয়া একটি আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেছেন, “গত বছরের ২৪ জুলাই শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালানো দেখেই সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, কোনো সমন্বয়কের আহ্বানে নয়।” তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ রাজনীতির জটিল হিসাব বোঝে না। তারা শুধু দেখে নিজের সন্তান দেশের রাস্তায় রক্তে ভেসে যাচ্ছে — সেটাই তাদের জাগিয়ে তোলে।

এই বক্তব্যটি দিয়েছেন তিনি ৩ আগস্ট রাতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফিসে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই স্মৃতিচারণ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পর। সেখানে তিনি দুইজন শিক্ষার্থীর বক্তব্য শোনেন — তাদের একজন গণিত বিভাগের, যিনি নিজের বক্তব্যে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। তাদের মধ্যে এক শিক্ষার্থীর পায়ে গুলিও লেগেছিল। তারা কেউই নিজেদের জন্য কিছু চাননি — চেয়েছেন কেবল বিচারের দাবি, এবং ক্যাম্পাস থেকে ছাত্ররাজনীতির নির্লজ্জ লেজুরবৃত্তিক ব্যবস্থার অবসান।

অধ্যাপক মারিয়া বলেন, “এই শিক্ষার্থীরা কোনো পার্টির ডাকে আসেনি। তাদের অনেকেরই তো কোটার প্রয়োজন ছিল না। তবুও তারা রাস্তায় নেমেছিল। তারা কোনো সুবিধা পাওয়ার আশায় আন্দোলন করেনি। বরং বন্ধু হারানোর অপরাধবোধ নিয়েই তারা আজও বেঁচে আছে।

তিনি আরও বলেন, “গত এক বছরে দেশে কাঙ্ক্ষিত কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং পুরোনো রাজনীতির স্বেচ্ছাচার, দুর্নীতি, নারী বিদ্বেষী বক্তব্য, আইন না মানার সংস্কৃতি, আবার ফিরে এসেছে। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই শিক্ষার্থীদের ত্যাগ অনেকটা কয়েকজন সুযোগসন্ধানী মানুষের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হয়ে গেছে।

তিনি স্ট্যাটাসে দেলোয়ার, ফারিয়া, এবং নাম না জানা বহু অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। বলেন, “এই আন্ডাররেটেড ছেলেমেয়েদের জন্যই দেশটা এখনো টিকে আছে। যারা গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে বা যারা আজও ট্রমা নিয়ে বেঁচে আছে — তাদের অবদান কোনোভাবেই ছোট করে দেখা যায় না।

অধ্যাপক মারিয়া শিক্ষকদেরও সমালোচনা করেন যারা দুই-একদিন মিছিলে গিয়ে ছবি তুলে রাজনীতি করে যান। আর যাঁরা সত্যিকারের কষ্ট নিয়ে আজও সেই ঘটনার ভার বয়ে বেড়াচ্ছেন, তারা কখনও মিডিয়ার সামনে নেই, বিতর্কেও নেই। অথচ তাদের হাত ধরেই আন্দোলনের গতি তৈরি হয়েছিল।

তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ফিরে গেছে ঘরে। তারা কোনো ‘পাওয়ার’ চাইনি। কিন্তু জুলাই তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে বন্ধু, আত্মীয়, স্মৃতি। তাই জুলাই তাদের কাছে গর্বের পাশাপাশি ট্রমার নামও বটে।

শেষে তিনি বলেন, “এই শিক্ষার্থীদের ত্যাগ যেন রাজনীতির হাতিয়ার না হয়। যেন তাদের সংগ্রাম একদিন সার্থক হয়। প্রিয় দেলোয়ার, ফারিয়া, এবং অন্য সবাই — তোমাদের জন্য ভালোবাসা। তোমাদের ত্যাগই ইতিহাস রচনার ভিত্তি।

No comments found