শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় সংঘর্ষে পরিণত হয়। শিক্ষার্থীরা সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়, যা পরবর্তীতে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে অন্তত ৮০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী 'আবরার পদত্যাগ চাই' স্লোগানে সচিবালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল। পুলিশ বাধা দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ও লাঠিচার্জ করে। পাল্টা প্রতিরোধে শিক্ষার্থীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অনুযায়ী, রাত ৩টার দিকে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তে তারা ক্ষুব্ধ। তারা মনে করেন, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং শিক্ষাসচিবের পদত্যাগ প্রয়োজন। শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে জানান, দাবির প্রতি সাড়া না পেলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।
এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শিক্ষা ক্ষেত্রে চলমান সংকট এবং শিক্ষার্থীদের দাবির পেছনের কারণগুলো নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য অংশের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী, তারা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি ও শিক্ষকের স্বচ্ছতা চান। এই ঘটনাটি শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা এবং শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি সামনে এনেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পরিস্থিতি উত্তরণে সরকারকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে, যাতে তারা তাদের দাবি যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেন।
ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে এবং শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারের উচিত শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা জীবন নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারবেন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে স্থায়ী উন্নয়ন সম্ভব হবে।