রাশিয়া শিগগিরই বিশ্বের নজর কাড়তে চলেছে নতুন এক কৌশলগত অস্ত্রের ঘোষণার মাধ্যমে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, এই অস্ত্রটি শুধু রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতাই বাড়াবে না, বরং বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্যেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) তাজিকিস্তানে এক শীর্ষ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিন বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, আমরা কিছুক্ষণ পরই এমন এক অস্ত্রের ঘোষণা দেব যা আধুনিক যুদ্ধে নতুন যুগের সূচনা করবে। ইতোমধ্যে এই অস্ত্রগুলো তৈরি ও পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে এবং সব পরীক্ষাই সফলভাবে চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় শক্তিশালী ও আধুনিক। বিশ্বের অন্য কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এমন উন্নত ও কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেই। আমরা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, এখন সেটি বাস্তবায়নের চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছে গেছি।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘোষণা আসলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি কূটনৈতিক বার্তা। কারণ ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্যকর হওয়া ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তিটি আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই শেষ হতে যাচ্ছে। ওই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া তাদের মোতায়েন করা পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যা সীমিত করেছিল।
রাশিয়া আগেই জানিয়েছে, তারা এই চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আগ্রহী। কিন্তু ওয়াশিংটন এখনো তাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দেয়নি। ফলে মস্কো মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্রের অনীহা নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতার পথ খুলে দিয়েছে।
পুতিনের এই বক্তব্যের পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, রাশিয়া এবার এমন এক অস্ত্র উন্মোচন করতে যাচ্ছে যা বর্তমান পারমাণবিক ভারসাম্যকে সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে। এটি শুধু সামরিক শক্তির প্রদর্শন নয়, বরং পশ্চিমা বিশ্বকে একটি বার্তা—রাশিয়া এখনো বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রে আছে এবং তাদের সামরিক প্রযুক্তি আগের চেয়ে বহুগুণ উন্নত।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল এ ঘোষণা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, রাশিয়ার এই নতুন উদ্যোগে বিশ্বে আবারও শীতল যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
তবে রাশিয়া বলছে, এই নতুন অস্ত্রটি তাদের “প্রতিরক্ষা নীতির” অংশ, যা শুধুমাত্র দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যই ব্যবহার করা হবে। তবুও বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে—বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর গোয়েন্দা সংস্থা ও সামরিক বিশ্লেষকরা এই ঘোষণার বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় আছেন।
বিশ্বজুড়ে যখন সংঘাত, নিষেধাজ্ঞা ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে, তখন রাশিয়ার নতুন অস্ত্রের ঘোষণা নিঃসন্দেহে বড় এক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকেই বলছেন—এ যেন নতুন এক বিশ্বশক্তি পুনর্গঠনের সূচনা।