শেষ ওভারের নাটকীয়তায় হেরে গেল ঢাকা বিভাগ। মাত্র এক বল বাকি থাকতে রংপুরের জয় নিশ্চিত হয় ১ উইকেটে। এই জয়ে কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নিল রংপুর, আর টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল ঢাকা।
জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টির রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় বিদায় নিতে হলো ঢাকা বিভাগকে। মাত্র এক বল বাকি থাকতে রংপুর বিভাগ জয় ছিনিয়ে নেয় ১ উইকেটে। এই জয়ের মাধ্যমে রংপুর নিশ্চিত করেছে কোয়ালিফায়ার, আর টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে ঢাকা।
বৃহস্পতিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচটি ছিল এলিমিনেটর। তাই আগে থেকেই জানা ছিল, হারলেই বিদায়। ঢাকা টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতায় নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২৩ রানে গুটিয়ে যায় তারা। একাই দলের ইনিংস টানেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার ৩৬ বলে ৬১ রানের বিধ্বংসী ইনিংসটিই ঢাকাকে লড়াইয়ে রাখে। ইনিংসে ছিল ৬টি ছক্কা ও ২টি চার। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর শুভাগত হোমের ১৫ রান।
রংপুরের বোলাররা শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। নাসুম আহমেদ, নাসির হোসেন ও আবু হাশিম দুটি করে উইকেট তুলে নেন।
১২৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে রংপুরের শুরুটাও ভালো ছিল না। ৪৮ রানে পঞ্চম উইকেট ও ৫২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দলটি। কিন্তু সেই সংকট থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক আকবর আলি ও অলরাউন্ডার নাসুম আহমেদ। দুজনে মিলে ৪১ বলে গড়েন ৬২ রানের জুটি। আকবরের ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ৪৪ রান। নাসুমও গুরুত্বপূর্ণ রান যোগ করেন।
১৯তম ওভারে স্পিনার রায়হান রাফসান ম্যাচে নতুন মোড় আনেন। তিনি মাত্র ২ রানে ২ উইকেট তুলে নিয়ে ঢাকার আশার আলো জ্বালান। কিন্তু শেষ ওভারে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যান আবদুল গাফ্ফার। জয় পেতে শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। রিপন মণ্ডলের বলে স্কুপে চার মারেন আকবর, কিন্তু পরের বলেই আউট হয়ে ফেরেন। শেষ উইকেটে ৪ বলে দরকার ৪ রান—দুই সিঙ্গেলের পর পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মেরে রংপুরকে জয় এনে দেন আবদুল গাফ্ফার।
এই জয়ে রংপুর বিভাগ নিশ্চিত করেছে এনসিএল টি-টোয়েন্টির কোয়ালিফায়ার পর্ব। এখন ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে তাদের লড়তে হবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম ও খুলনার মধ্যে পরাজিত দলের বিপক্ষে। অন্যদিকে, এই হারে বিদায় নিতে হলো মাহিদুল অঙ্কনের নেতৃত্বাধীন ঢাকা বিভাগকে।
ঢাকার জন্য এটি ছিল হতাশাজনক সমাপ্তি। টুর্নামেন্ট জুড়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখাতে না পারা এবং গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ব্যাটিং ব্যর্থতা তাদের কোয়ালিফায়ারের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। তবে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের অসাধারণ ইনিংস দর্শকদের মন জয় করেছে, যা ঢাকার সংগ্রামী মানসিকতার প্রতিফলন।
রংপুরের শিবিরে এখন উল্লাসের ঢেউ। শেষ ওভারের থ্রিলারে জয় তাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, যা কোয়ালিফায়ারে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।