২০২৪ সালের ৪ অক্টোবর শেরপুর জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়া ১৬০টি পরিবার এখন নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’। সোমবার (২৬ মে) সকালে ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ঘরের প্রতীকী চাবি হস্তান্তর করেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকা—এটাই আমাদের ধর্ম। মানবতার সেবাই আমাদের ইবাদত। এই কাজের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের জন্য দোয়া করি, আল্লাহ যেন সবাইকে উত্তম প্রতিদান দেন।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল, ফাউন্ডেশনের মানবসেবা বিভাগের প্রধান মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, প্রজেক্ট এক্সিকিউটিভ মো. জোবায়ের ইবনে কামাল, ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির এবং ‘রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ’ শেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম।
ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২৪ সালের অক্টোবরের ভয়াবহ বন্যায় ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী, নকলা ও সদর উপজেলায় বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ঝিনাইগাতীতে ১০৫টি, নালিতাবাড়ীতে ৪৯টি, নকলায় ২টি এবং সদর উপজেলায় ৪টি—মোট ১৬০টি আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। প্রতিটি ঘরে রয়েছে দুইটি কক্ষ ও একটি বারান্দা, নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ টাকা করে।
এছাড়া বন্যা পরবর্তী সময়েই ফাউন্ডেশন তিন হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ১৯৯টি পরিবারকে ৪০ হাজার টাকা করে নগদ আর্থিক অনুদান প্রদান করে, যার মোট পরিমাণ ৭৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
উপকারভোগীদের একজন, দিপঙ্কর হাজং বলেন, “বন্যায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলাম। এখন এই ঘর পেয়ে আবার বাঁচার আশা পেয়েছি। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।”
প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বে ছিল ‘ঢাকা ভার্টেক্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’ ও ‘শামীম ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’। তাদের পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবকরা তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
মানবতার কল্যাণে কাজ করে আসা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের এ উদ্যোগ শেরপুরবাসীর কাছে এখন আশার নাম।



















