বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করেছেন, যা ১৯৭৫ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের ওপর শেখ হাসিনার নিষ্ঠুর আচরণের প্রমাণ হিসেবে চিহ্নিত। তিনি জানান, পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ নির্দেশ দেন। এর অর্থ ছিল, চিকিৎসকরা আহতদের কোনো চিকিৎসা দিতে পারবেন না এবং কোনো রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া যাবে না।
এই বিষয়ের প্রমাণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন হাতে এসেছে। প্রসিকিউটর জানান, "হাসপাতালে আহত রোগীরা ও তাদের পরিবার জানিয়ে দিয়েছেন, শেখ হাসিনা পলাতক হওয়ার আগের সময়ে একবার হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন এবং এমন নির্দেশ দেন।" এমনকি হাসপাতালের চিকিৎসকরা এবং সংশ্লিষ্ট স্টাফও একই ধরনের বর্ণনা দিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে, চিফ প্রসিকিউটর বলেন, "যারা আহত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, তাদের অনেকের মৃত্যু হয়েছে, এবং সেসময় শহীদদের মৃতদেহ সুরতহাল করার অনুমতি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের নির্দেশে গুলিবিদ্ধদের মৃত্যুর সঠিক কারণও লেখা হয়নি। এই নিপীড়ন যে শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন ছিল না, বরং এটি ছিল এক জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ।"
এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন যে, সেই সময় শহীদদের লাশ দ্রুত দাফন করতে বাধ্য করা হয়েছিল, যাতে সেগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদন বা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রস্তুত করা না যায়। আদালতের কাছে প্রমাণ হিসেবে এসব বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, "এ ধরনের অপরাধের প্রমাণ পাওয়ার পর, আমাদের পর্যাপ্ত যাচাই-বাছাই এবং ফরেনসিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এগুলো গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আদালতের কাছে পাঠানো হবে।"
এই ঘটনায়, শেখ হাসিনার নির্দয় আচরণের আরও তথ্য উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে অভিযুক্ত মামলাগুলোর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।