close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

শেখ হাসিনার চাইতে নির্দয় নারী ঘাতক আর হতে পারে না , এবি পার্টি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জুলাই গণহত্যা নিয়ে এবি পার্টির তীব্র বক্তব্য— শেখ হাসিনার মতো পৈশাচিক শাসক পৃথিবীতে আর কেউ নেই। প্রদর্শনীতে নিহতদের পরিবার জানালেন হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতা।..

বছরের সবচেয়ে আলোচিত এবং বেদনাদায়ক সময় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে উঠেছে জুলাই মাস। এবি পার্টির ভাষ্য অনুযায়ী, ৩৬ দিনের এই মাসজুড়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দমন-পীড়ন, গুম, খুন, লুটপাট, হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলি চালানো এবং কারফিউ জারির মাধ্যমে সরকার জনগণের কণ্ঠরোধ করেছে। দলটির মতে, এই বর্বরতা পৃথিবীর যেকোনো পৈশাচিক শাসনের ইতিহাসকেও হার মানিয়েছে।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে এসব দাবি করেন দলটির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। ‘কোটা না মেধা: এক রক্তস্নাত অধিকারের সংগ্রাম’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীটি ১৩ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

চিত্র প্রদর্শনীতে জুলাই মাসের দমন-পীড়নের বিভিন্ন ভয়াবহ মুহূর্ত তুলে ধরা হয়েছে। শহীদের রক্ত, পরিবারের কান্না, মায়ের কোলে সন্তানের মৃতদেহ— সবই যেন ছবিতে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। উদ্বোধনী বক্তৃতায় বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ দিলারা চৌধুরী বলেন,হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে মুক্তি অর্জন করেছিলাম, তা রক্ষা করতে না পারলে এই জাতি আবারও ফ্যাসিবাদের কবলে পড়বে। গণ-অভ্যুত্থান ধরে রাখতে না পারলে নিজেদেরই তার মূল্য চোকাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে রাষ্ট্রকে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান তার বক্তব্যে সরাসরি শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বলেন,গণতন্ত্র ধ্বংস, বাকস্বাধীনতা দমন এবং রাষ্ট্রীয় সহিংসতার এক নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা। ভারতে পালিয়ে গিয়ে নিজের দায় এড়াতে পারবেন না।

তিনি আরও দাবি করেন, জনগণ আজ অবরুদ্ধ, বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে সারা দেশ কাঁপছে, অথচ সরকার দায় অস্বীকার করছে।

চিত্র প্রদর্শনীতে নিহত শহীদদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এবং নিজেদের বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
শহীদ জিসানের মা জেসমিন আক্তার বলেন,আমার ছেলে জিসান রায়েরবাগে শহীদ হয়। এরপর তার স্ত্রী আত্মহত্যা করে। একসঙ্গে আমি দুই সন্তান হারালাম। আমি খুনি হাসিনার বিচার চাই।

শহীদ নুরু ব্যাপারীর স্ত্রী রোমানা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন,আমার স্বামীর লাশও তখন আমি আনতে পারিনি। পরিস্থিতি এমন ছিল, যেন আমরা কেউ মানুষ না।

অনুষ্ঠানে এবি পার্টির নেতাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, এবং সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন আলতাফ হোসাইন।

তারা সবাই সরকারবিরোধী বক্তব্যে যুক্ত হয়ে দাবি করেন, “জবাবদিহি না থাকলে আগামী দিনে আরও ভয়াবহতা নেমে আসবে। এই রাষ্ট্রব্যবস্থা আর জনবান্ধব নেই, এখনই পরিবর্তন জরুরি।

জুলাই গণহত্যার চিত্র প্রদর্শনী এবি পার্টির শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি যেন হয়ে উঠেছে নিপীড়নের ইতিহাস সংরক্ষণের এক বাস্তব দলিল। পরিবারগুলোর আর্তনাদ, বিশ্লেষকদের উদ্বেগ, এবং চিত্রের ভাষ্য— সব মিলিয়ে প্রদর্শনীটি জানিয়ে দিয়েছে, এই জাতিকে আর বেশি দিন স্তব্ধ রাখা যাবে না।

Hiçbir yorum bulunamadı