জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) সম্প্রতি একটি বিস্তৃত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছাত্র, শ্রমিক ও সাধারণ জনগণের ওপর শেখ হাসিনা সরকার এবং আওয়ামী লীগের দমন-পীড়ন, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করতে সরকারি বাহিনী এবং দলীয় ক্যাডাররা যৌথভাবে ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে। এতে শতাধিক মানুষ গুরুতর আহত হয় এবং বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে নির্যাতিতদের সাক্ষাৎকার, ভিডিও ফুটেজ এবং বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য সংযোজন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম এবং অনিয়মিত গ্রেফতারের অভিযোগও আনা হয়েছে।
জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন শেখ হাসিনা সরকারের এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে চলমান মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে অবিলম্বে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সরকারকে দমনমূলক নীতির অবসান ঘটাতে হবে।
আন্তর্জাতিক চাপ ও ভবিষ্যৎ প্রভাব: বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন শেখ হাসিনা সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়িয়ে তুলবে। একইসাথে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।