close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের চার বিলাসবহুল বাগানবাড়ির সন্ধান: দুদকের নজরদারিতে সম্পদ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গাজীপুরের কানাইয়া এলাকায় অবস্থিত এক বিশাল বিলাসবহুল বাগানবাড়ি ‘টিউলিপ’স টেরিটরি’ নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনা চলছে। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের নামে থাকা চ
গাজীপুরের কানাইয়া এলাকায় অবস্থিত এক বিশাল বিলাসবহুল বাগানবাড়ি ‘টিউলিপ’স টেরিটরি’ নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনা চলছে। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের নামে থাকা চারটি বাগানবাড়ির মধ্যে এটি অন্যতম। ডুপ্লেক্স ভবন, শানবাঁধানো ঘাট, পুকুর এবং মনোরম পরিবেশের এই বাগানবাড়ি স্থানীয়দের নজর কেড়েছে বহুদিন ধরেই। বাগানবাড়ির পরিচয় ও মালিকানা গাজীপুর শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে কানাইয়া এলাকায় অবস্থিত ‘টিউলিপ’স টেরিটরি’। নামকরণ করা হয়েছে সম্প্রতি ব্রিটিশ মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করা টিউলিপ সিদ্দিকের নামে, যিনি শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও শেখ রেহানার কন্যা। নথিপত্র অনুযায়ী, বাগানবাড়িটির মালিক শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক। তবে এই এলাকায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের মোট চারটি বিলাসবহুল বাগানবাড়ি রয়েছে বলে জানা গেছে। কে কোন বাগানবাড়ির মালিক? স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে প্রাপ্ত নথি অনুসারে, চারটি বাগানবাড়ির দলিলাধীন জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ বিঘা (৮১৬ শতক)। তবে স্থানীয়দের দাবি, জমির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। ১. প্রথম বাগানবাড়ি: শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানা, তাঁর ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে। 2. দ্বিতীয় বাগানবাড়ি: শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিকের নামে। 3. তৃতীয় ও চতুর্থ বাগানবাড়ি: শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও শেখ রেহানার দেবর মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নামে। দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত ও স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং শেখ রেহানাও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। এর পর থেকেই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁদের পরিবারের সম্পদের খোঁজ নিতে শুরু করে। গাজীপুর জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জমির তথ্য চাওয়া হয়েছে। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব ও এলএ) মোহাম্মদ কায়সার খসরু বলেন, ‘দুদক থেকে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জমির তথ্য চেয়েছে। আমরা জেলার ভূমি অফিস থেকে তথ্য সংগ্রহ করছি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে, তাঁদের নামে কী পরিমাণ জমি রয়েছে।’ টিউলিপ’স টেরিটরির বর্তমান অবস্থা ২ ফেব্রুয়ারি টিউলিপ’স টেরিটরিতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একটি ডুপ্লেক্স ভবন ও কয়েকটি টিনের ঘর রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় এবং ভবনের কিছু অংশ পোড়ানো হয়েছে। বাড়িতে এখন কোনো নিরাপত্তাকর্মী নেই। বিশাল পুকুরে দুটি নৌকা রয়েছে, তবে কোনো মানুষের আনাগোনা নেই। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্ট সরকার পতনের পরপরই একদল লোক এসে বাড়িটিতে ভাঙচুর চালিয়েছে। এরপর থেকে আর কাউকে দেখা যায়নি। আগে এখানে কঠোর নিরাপত্তা ছিল, পতাকা লাগানো গাড়িও আসত।’ গাজীপুর পৌর ভূমি অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, টিউলিপ’স টেরিটরির ২৬৩ শতক (প্রায় ৮ বিঘা) জমির মালিক শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক। তবে স্থানীয়দের মতে, এর পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। উচ্চমূল্যের সম্পত্তি ও সরকারি তদন্ত সরকারি নথি অনুযায়ী, ২৫ বিঘা জমির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪৯ কোটি টাকা। তবে বাজার মূল্যে এই সম্পত্তির দাম ১০০ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে। দুদকের তদন্ত এবং জমির মালিকানার তথ্য সংগ্রহের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের এই সম্পদ কীভাবে ব্যবস্থাপনা করা হবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে। তবে স্থানীয়দের মতে, এতদিন এসব বাগানবাড়ি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিনোদনের কেন্দ্র ছিল, যা বর্তমানে জনসাধারণের আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেষ কথা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের চারটি বিলাসবহুল বাগানবাড়ি এখন তদন্তের আওতায়। গণ-অভ্যুত্থানের পর দুর্নীতি দমন কমিশন ও প্রশাসনের কঠোর নজরদারির ফলে এই সম্পত্তিগুলোর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে, আর তখনই জানা যাবে, এই বিলাসবহুল বাগানবাড়িগুলোর আসল মূল্য কত এবং কীভাবে এই সম্পত্তিগুলো ব্যবস্থাপনা করা হবে।
コメントがありません