শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে পরিবারতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলে পরিণত করেছেন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আন্তরিক ও স্বৈরাচারী শাসননীতি
দলের অভ্যন্তরীণ হেরফের ও নেতাদের অপসারণ
অভ্যন্তরীণ নৈতিক সংকট ও ভবিষ্যতের প্রশ্ন
..

বাংলাদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে অন্যতম আওয়ামী লীগ সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যন্তরীণ সংকট ও নেতৃস্থানীয় বিরোধের মুখোমুখি হয়েছে। বিএনপির তরফ থেকে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর, দাবি উঠেছে যে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ ও দেশের বাইরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।

এক জাতীয় দৈনিকের সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের কিছু প্রবীণ নেতারা গত ১৫ বছরের শাসনামলে নানা ত্রুটি ও অসামঞ্জস্য তুলে ধরেছেন। তাঁদের মতে, শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ওপর খুব সংবেদনশীল এবং তাঁর বিরুদ্ধে কথা বললে বা সমালোচনা করলে তাঁর রোষানলের শিকার হয়ে ওঠেন। আরও অভিযোগ ওঠে, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে পরিবারতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলে পরিণত করেছেন।

সাক্ষাৎকারে বলছেন, "যে কেউ আমার বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদেরই আমার রোষানলের শিকার হতে হয়," এই মন্তব্যে স্পষ্ট যে, শাসনের ক্ষেত্রে স্বৈরাচারী কায়দা বজায় রাখা হয়েছে। প্রবীণ নেতা ড. কামাল হোসেন ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা অত্যন্ত দাম্ভিক ও অহংকারী, এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দুর্নীতি ও অপরাধীদের দলের মধ্যে ভেড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।

১৯৮১ সালের ১৭ মে দিল্লি থেকে দেশে ফিরে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই, তাঁর শাসনপদ্ধতিতে পরীক্ষিত নেতাদের একে একে দূরে সরিয়ে দেন। ৯১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর, ড. কামাল হোসেনসহ অনেক প্রবীণ নেতাকে দল ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। এরপর, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে যারা দলে থেকে সৎ মন্তব্য করেছেন, তাঁদের অপসারণ ও বহিষ্কারের ঘটনা সাধারণ হয়ে উঠেছে।

এক নজরে, শেখ হাসিনার পরিবার – ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ—তাঁর শাসননীতির কেন্দ্রে থাকলেও, অন্যান্য জাতীয় নেতাদেরকে যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে দলের মধ্যে অসন্তোষ ও বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসননীতি এবং পারিবারিক স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ ধীরে ধীরে অভ্যন্তরীণ সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। তাঁরা আরও যুক্তি দেন, শাসনামলে প্রতিষ্ঠাতা মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকের যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শেখ হাসিনাকেই দায়ী করা যেতে পারে।

শেখ হাসিনার শাসনামলে দলের বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতা ও সক্রিয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অভাব, দুর্নীতির অভিযোগ ও স্বৈরাচারী শাসননীতি আলোচনার মুখে এসেছে। এটি প্রশ্ন তোলে, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ও দলীয় নীতিতে কি ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে, এবং দেশের বৃহত্তর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠার পক্ষে এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কীভাবে প্রভাব ফেলবে।

Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator