শব্দের চেয়ে ৪ গুণ গতির ড্রোন বানাচ্ছে চীন: সামরিক থেকে বাণিজ্যিক খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির দৌড়ে নতুন এক মাইলফলক তৈরি করতে যাচ্ছে চীন। সম্প্রতি দেশটির লিংকং তিয়ানশিং টেকনোলজি একটি সুপারসনিক ড্রোন তৈরির ঘোষণা দিয়েছে, যা শব্দের চেয়
বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির দৌড়ে নতুন এক মাইলফলক তৈরি করতে যাচ্ছে চীন। সম্প্রতি দেশটির লিংকং তিয়ানশিং টেকনোলজি একটি সুপারসনিক ড্রোন তৈরির ঘোষণা দিয়েছে, যা শব্দের চেয়ে চার গুণ বেশি গতিতে উড়তে সক্ষম হবে। অত্যাধুনিক এই প্রকল্প সফল হলে চীনের প্রযুক্তি জগতে এটি হবে এক নতুন বিপ্লব। প্রকল্পের উচ্চাভিলাষ ও সক্ষমতা চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশের রাজধানী চ্যাংডুতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিংকং তিয়ানশিং টেকনোলজি জানিয়েছে, তাদের ড্রোনের নাম দেওয়া হয়েছে "কুয়ানতিয়ানহৌ" বা "সোরিং স্টোন মানকি"। এটি মূলত একটি আনমেন্ড অ্যারিয়েল ভেহিক্যাল (UAV), যা সামরিক হাইপারসনিক প্রযুক্তির বাণিজ্যিক ব্যবহারের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এ ড্রোনটি ৭ মিটার লম্বা এবং ওজনে দেড় টনের কাছাকাছি। এতে শক্তি সরবরাহের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে দুটি শক্তিশালী ডেটোনেশন ইঞ্জিন, যা ড্রোনটিকে শব্দের চেয়ে চারগুণ বেশি গতিতে উড়তে সহায়তা করবে। ২০২৩ সালে পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন, ২০৩০ সালে প্রোটোটাইপ টেস্ট চীনা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০২৩ সালে সুপারসনিক ড্রোনটির প্রথম পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন অনুষ্ঠিত হবে। সফলতার পর ২০৩০ সালে প্রোটোটাইপ টেস্টিং শুরু হবে। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই গত বছর কনকর্ড বিমানের চেয়ে দ্বিগুণ গতির একটি প্রোটোটাইপ বাণিজ্যিক প্লেন পরীক্ষা করেছে। এই ড্রোন প্রকল্প তারই ধারাবাহিক অগ্রগতি বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। বিশ্বের দ্রুততম বাণিজ্যিক বিমানকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্য বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম যাত্রীবাহী বিমান হিসেবে কনকর্ডকে ধরা হয়। এটি নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন পৌঁছাতে সময় নেয় মাত্র ২ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট। তবে লিংকং তিয়ানশিং-এর ড্রোন কনকর্ডের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে ছুটতে সক্ষম হবে। এমনকি মার্কিন এবং সুইস প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন অনেকটাই এগিয়ে আছে। বাণিজ্যিক ও সামরিক ব্যবহার সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের মতে, এই প্রকল্পে চীনের লক্ষ্য শুধু সামরিক নয়, বরং বাণিজ্যিক খাতেও সুপারসনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা। যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডের কিছু প্রতিষ্ঠানও এই প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছে। তবে তারা এখনো বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য কার্যকর কোনো যান তৈরি করতে পারেনি। বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় চীনের আধিপত্য মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ দ্রুতগামী বিমানের গবেষণায় কাজ করছে, সেখানে চীন তাদের লক্ষ্য পূরণে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে চীন এই ড্রোন প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। চীনের এই উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ ভবিষ্যতে বৈশ্বিক সুপারসনিক প্রযুক্তি খাতের নিয়ন্ত্রণে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। সামরিক ও বাণিজ্যিক খাতে এর ব্যবহার নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। শেষ কথা যেখানে অন্যান্য দেশ সুপারসনিক প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে, চীন ইতোমধ্যে বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে। শব্দের চেয়ে চার গুণ গতির ড্রোন কেবল প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার নয়, বরং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় চীনের আধিপত্যের ইঙ্গিত বহন করে।
Walang nakitang komento


News Card Generator