নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, ১৯ অক্টোবরের মধ্যে বিকল্প প্রতীক না জানালে এনসিপির জন্য প্রতীক বেছে নেবে কমিশন নিজেই। শাপলা প্রতীকের দাবি নাকচ করায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বাড়ছে উত্তেজনা।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) প্রতীক নির্বাচনের জন্য আবারও চিঠি দিয়েছে। কমিশনের স্পষ্ট ঘোষণা—১৯ অক্টোবরের মধ্যে বিকল্প প্রতীক না জানালে ইসি নিজস্ব বিবেচনায় এনসিপির প্রতীক নির্ধারণ করবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, “এনসিপি শাপলা প্রতীক হিসেবে চাইছে। কিন্তু বিধিমালায় এই প্রতীক নেই। তাই আমরা তাদের বিকল্প প্রতীক জানানোর জন্য চিঠি দিয়েছি। আগামী ১৯ অক্টোবরের মধ্যে তারা চাইলে বিকল্প প্রস্তাব দিতে পারেন, না দিলে কমিশন নিজেরা প্রতীক ঠিক করবে।”
তবে এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, কমিশন নিজ উদ্যোগে প্রতীক বাছাই করলে নতুন করে দলীয় অসন্তোষ ও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে আখতার আহমেদ বলেন, “এটা সময়ের ব্যাপার, সময়ই বলে দেবে।”
শাপলা প্রতীকটি কেন অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব নয়—এই প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, “কমিশন মনে করে শাপলাকে অন্তর্ভুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই।” তিনি আরও বলেন, “আইন ও প্রয়োজনীয়তা সময়, পরিবেশ ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি জানান, “এটা জাতীয় প্রতীক কি না, সেটা প্রাসঙ্গিক নয়। নির্বাচন কমিশন মনে করছে, এই প্রতীক সংযোজনের দরকার নেই।”
অন্যদিকে এনসিপি স্পষ্ট জানিয়েছে, শাপলা প্রতীক না পেলে তারা নিবন্ধন নেবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, “সেটা তাদের ব্যাপার, কমিশন নিজের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করবে।”
এ সময় তিনি আরও জানান, আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে ইসি ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করছে। আগামী ২০ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রবাসী ভোটারদের বিষয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে ১১টি দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। আমরা চেষ্টা করছি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অ্যাপটি চালু করতে। তবে এই নির্বাচনে প্রবাসীদের কতটা অন্তর্ভুক্ত করা যাবে, সেটা এখনো নিশ্চিত নয়।”
ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী সরঞ্জাম সংগ্রহের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে বলে জানান ইসি সচিব।
এর আগে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর কমিশন ৫০টি প্রতীক থেকে নিজেদের পছন্দের প্রতীক বেছে নিতে এনসিপিকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু এনসিপি শাপলা প্রতীক দাবি করে অন্য কোনো বিকল্প দেয়নি।
বর্তমানে ইসির সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, কমিশনের এই অবস্থান এনসিপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।