জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তারা 'শাপলা' প্রতীক না পেলে রাজনৈতিক আন্দোলনে নামবে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও দলটি গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ না পেলে রাজনৈতিক আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির দাবি, শাপলা প্রতীক তাদের সাংগঠনিক ও আদর্শিক পরিচয়ের প্রতীক, এবং আইনগতভাবে তা পেতে তাদের কোনো বাধা নেই। তাই এই প্রতীক না পেলে তারা রাজনৈতিকভাবে মাঠে নামবে।
গত ১৩ জুলাই রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী।
তিনি বলেন, শাপলা প্রতীক ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই। লিগ্যালি আমরা দেখেছি, এই প্রতীক পেতে আমাদের কোনো বাধা নেই। যদি বাধা দেওয়া হয়, তাহলে রাজনৈতিকভাবে আমরা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াবো। আইনের বাইরে যাবো না, তবে আন্দোলনের রাস্তা খোলা থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, বর্তমান ইসি গঠনের পদ্ধতি সঠিক হয়নি। ইসিকে পুনর্গঠন করতে হবে। সেই আইনেরও পরিবর্তন দরকার। বর্তমানে ইসির অনেক সদস্য দলীয়ভাবে কাজ করছেন, যেন তারা একটি দলের মুখপাত্র। এটা নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য হুমকি।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, ইসিতে যারা পেশাদার ও নিরপেক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, তাদের রাখা যেতে পারে।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয় এনসিপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। উপস্থিত ছিলেন মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম এবং যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ।
বৈঠক শেষে জহিরুল ইসলাম জানান, তারা শাপলা প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে ইসিতে নতুন করে আবেদন জমা দিয়েছেন। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের 'নৌকা' প্রতীক বাদ দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে। তার বক্তব্য, “যেহেতু আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে, তাই নৌকা প্রতীক কমিশনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা। আমরা সেটা তুলে ধরেছি। কমিশন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
জাতীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা ব্যবহারে কোনো সমস্যা আছে কি না—এমন প্রশ্নে জবাবে জহিরুল ইসলাম বলেন, “শুধু শাপলা জাতীয় প্রতীক নয়, জাতীয় প্রতীকে আরও উপাদান আছে—যেমন পাট পাতা, ধানের শীষ, তারকা। এই উপাদানগুলো রাজনৈতিক দলগুলো ব্যবহার করছে। জাতীয় প্রতীকের নির্দিষ্ট রঙ ও মাপ আছে, কিন্তু প্রতীক ব্যবহারে বাধা নেই। আমরা কমিশনের নজরে এনেছি, শাপলা আমাদের জন্য আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য প্রতীক।
বৈঠকে প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিয়েও আলোচনা হয়। এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা চায় প্রবাসীরাও যেন দেশের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে চিন্তাভাবনার আশ্বাস দিয়েছে।
নিবন্ধনের বিষয়ে কমিশনের অগ্রগতি জানতে চাইলে জবাবে জানানো হয়, এনসিপির আবেদন প্রক্রিয়া চলমান আছে, এবং নিয়ম অনুযায়ী তা বিবেচনা করা হচ্ছে।